চৌদ্দগ্রামে কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি, ৬ ঘন্টায় কুকুরে কামড়ে আহত ৮ জন শিশু বৃদ্ধ

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি।।
প্রকাশ: ২ মাস আগে

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন গ্রামে সম্প্রতি কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। যা জনজীবনে নতুন করে সংকটের সৃষ্টি করেছে। পৌর এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামে প্রতিদিনই কেউ না কেউ কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় বেওয়ারিশ কয়েকটি কুকুরের কামড়ে শিশু বৃদ্ধসহ ৮ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (০৪ জানুয়ারী)সকাল দশটা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার বাসিন্দারা কুকুরের কামড়ে আহত হন।

আহতরা হলো পৌর এলাকার ১৪ মাস বয়সের ইউনুস এর ছেলে ইফরান, তানজিনা (০৫)আক্তার, শাকিল (০৫) সারওয়ার(০৯), মিনহাজ(১০),আইরিন(০৩), সাইফুল ইসলাম (৫৮), শামীম (১৯)।

এই রোগীরা চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালের ইমারজেন্সী বিভাগের আবুল হাশেম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আহত ব্যক্তিদের বাড়ি চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডেরসহ আশপাশের এলাকার।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রায় ২৫-৩০ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, যাদের বয়স ৪ থেকে ১২ বছরের ।

শিশুদের কুকুর থেকে দূরে রাখা, আক্রমণের শিকার হলে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে টিকা নেওয়া, এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার মাধ্যমে এই সংকট থেকে অনেকাংশে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

হাসপাতাল, রোগী ও তাঁদের স্বজন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল দশটার দিকে নাটাপাড় গ্রামে কালো রঙের একটি কুকুর এক ব্যক্তির পায়ে কামড় দেয়। এরপর কুকুরটিকে মারতে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করলে কুকুরটি বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগের গ্রহন করছে না। কুকুরের উপদ্রব বন্ধে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাজী মো. ইউনুছ বলেন, “আমার ছেলেকে( ইরফান) বাড়ি সামনের গেইটে রাস্তার পাশে আমার মায়ের কোলে থাকা অবস্থায় কুকুর কামড় দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় প্রায়ই ঘটছে।”

একইভাবে, পাশের একটি গ্রামের গৃহবধূ ফাতেমা বেগম জানান, “আমাদের এলাকার কুকুরগুলো হঠাৎ করেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। শিশুরা বাড়ির বাইরে খেলতে গেলেই ভয় পাচ্ছে।”

পৌর এলাকার হোসাইন মামুন বলেন বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং খাবারের অভাব তাদেরকে আরও আক্রমণাত্মক করে তুলছে। এছাড়া বেশ কিছু এলাকায় পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে কুকুরের বিচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন হাসপাতালে নিতে আসা কুকুরের কামড়ে আহত রোগীদের জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে টিকার সংকট এখন পযন্ত নেই তবে সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম। বেওয়ারিশ কুকুর থেকে দূরে থাকতে সচেতন হতে হবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ জানান, “বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণে দ্রুত একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পরিকল্পনা চলছে। কুকুরগুলোকে টিকাদান ও নির্দিষ্ট স্থানে স্থানান্তরের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণের কথা ভাবা হচ্ছে।