এন এ মুরাদ ।। ৬ মাসের দুধের শিশুকে নিয়ে কুমিল্লা ডাক্তারের কাছে যাবেন এক মা। তিনি কোম্পানীগঞ্জ বাসস্টেশনে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় সন্তান কান্না করতে থাকেন। তিনি বুঝতে পারেন সে ক্ষুধার্ত। তাকে দুধ পান করাতে হবে। স্টেশনের কোথাও নিরাপদ কোন জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে সড়কের উপর বসেই অন্যদিকে মুখ করে শিশুকে বুকের দুধ দেন। এমন চিত্র প্রতিনিধির ক্যমারায় গতকাল রবিবার কোম্পনাীগঞ্জ স্টেশনে ধরা পড়ে। বড় বড় স্টেশন ও শপিংমলগুলোতে বেস্ট ফিডিং কর্ণার না থাকায় এমন দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। বেশিরভাগ সময় মায়েরা ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদ কক্ষের অভাবে লজ্জায় শিশুকে বুকের দুধ দিতে চায়না। তখন কিš‘ ওই শিশুরা দুগ্ধ পানের ন্যার্যঅধিকার থেকে হয় বঞ্চিত। লঙ্ঘিত হয় তাদের মানবাধিকার। তাই শিশুদের দুগ্ধপানের জন্য নিরাপদ ও শঙ্কাহীন অনুকুল পরিবেশ বাঞ্চনীয়।
কুমিল্লা- ময়নামতি- ক্যান্টনমেন্ট থেকে সিলেট মহাসড়কের ব্রাক্ষণবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ৪০টি স্টেশন আছে। ওইসব স্টেশনের কোথায়ও কোন বেস্ট ফিডিং কর্ণার নাই। ঢাকা-চট্র্রগ্রাম মহসড়কের কুমিল্লা অংশের দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম ওই সব স্টেশনের কোথাও বেস্ট ফিডির্ং কর্ণার নাই। বর্তমানে লাখ লাখ নারী কর্মসূত্রে কিংবা জীবনের প্রয়োজনে ঘর থেকে বাহির হয়ে নিরাপদ দুগ্ধদান কক্ষ না থাকায় সন্তানদের নিয়ে পড়ছেন চরম বিড়ম্বনায়।
সচেতন নাগরিকদের মতে “আগামী প্রজন্মের জন্য শিশুর স্বা¯’্য সুরক্ষার বিষয়টি আমলে এনে ঢাকা চট্রগ্রামে মহাসড়ক ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ক্যান্টনমেন্ট, চান্দিনা, ইলয়টগঞ্জ, গৌরিপুর, দাউদকান্দি, পদুয়ার বাজার, চৌদ্দগ্রাম, দেবিদ্বার, কোম্পানীগঞ্জ, কংশনগরসহ ব্যাস্ততম স্টেশনগুলোতে নিরাপদ দুগ্ধপান কক্ষ ¯’াপন করা প্রয়োজন”।
নারীকে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দেশের সকল কর্মক্ষেত্রে (প্রতিষ্ঠান) ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ¯’াপনের নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশের ১৪ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও সব কর্মক্ষেত্রে এর বাস্তবায়ন হয়নি।
এক সূত্রে জানাগেছ, ২০১৯ সালে ৯ মাসের শিশুকে নিয়ে এক আইনজীবী ‘মা’ ইসরাত হাসান রিট করেন। রিট আবেদনের ভিত্তিতে কর্মক্ষেত্র, বিমানবন্দর, বাস, রেলওয়ে স্টেশন ও শপিংমলে মাতৃদুগ্ধ কক্ষ ও বেবি কেয়ার কর্নার ¯’াপনের জন্য প্রয়াজনীয় ব্যব¯’া নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন আদালত। এই রুলের প্রেক্ষিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও কয়েকটি রেলওয়ে স্টেশনসহ প্রায় ১২ টি ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ¯’াপন করা হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় নাই বললেই চলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে “ শিশুর জন্য মায়ের দুধ সর্বোৎকৃষ্ট খাবার, শিুশুকে কোলে নিয়ে দুধ খাওয়ালে মা ও শিশু উভয়ের শারীরিক- মানসিক উন্নতি হয়। তাই শিশুকে শঙ্কামুক্ত দুধ খাওয়াতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রের পাশা-পাশি বাসস্টেশনের যাত্রী ছাউনিগুলোতে বেস্ট ফিডিং কর্ণার প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। তাহলেই নারীরা স্বস্তিকর পরিবেশে শিশুদের দুগ্ধপান করাতে পারবে। এতে মা ও শিশু উভয়ে ভালো থাকবে”। ###
এন এ মুরাদ
মোবাইলঃ ০১৬৭২-৪১৬৫২৩
তরিখঃ ১১-০৯-২০২২ইং