তিল চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

তিল চাষ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন মাগুরার চাষিরা। গোটা জেলাতে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তিল চাষ। যা স্থানীয় কৃষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কেননা অন্যান্য ফসলের মতো তিল চাষে তেমন ঝামেলা নেই বললেই চলে। এ কারণে কৃষি বিভাগের পরামর্শে পতিত জমিতে তিল চাষ করে প্রত্যাশার চাইতে বেশি ফলন ও দাম ভালো থাকায় লাভবান হচ্ছেন জেলার চাষিরা। স্থানীয় বাজার সহ সারাদেশে রয়েছে এই তিলের ব্যাপক চাহিদা। এতে ভোজ্য তেলের ঘাটতি ও চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে এমনটাই মনে করছেন কৃষি বিভাগ।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে এ বছর মাগুরা সদর, শালিখা উপজেলা, মহম্মদপুর উপজেলা উপজেলা এবং শ্রীপুর উপজেলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে তিল চাষ করা হয়েছে। যা এরইমধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। বারি তিল-২, বারি তিল-৪ এবং বিনা তিল-৩ চাষ করে সফল হচ্ছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। এই তিল কালো এবং গাছে ৩-৪ টি প্রধান শাখা হয়। অনেকগুলো উপশাখা হয় বলে ফলনও বেশি হয়। বিঘা প্রতি ৭-৮ মণ তিল উৎপাদিত হয়।

শালিখা উপজেলার বৈখালি গ্রামের তিল চাষি মো. বশির মোল্লা বলেন, তিল অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। এবার ১৫ জমিতে তিল চাষ করছি। এতে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। তিল হবে ৩ মণ। ৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি করলে ১৫ হাজার টাকার তিল বিক্রি করা যাবে। খরচ বাদ দিলেও অন্তত ১২ হাজার টাকা মুনাফা হবে বলে মনে করেন এই কৃষক।

আগাছা নিড়ানিতে ব্যস্ত বৈখালি গ্রামের অন্য আরেক কৃষক গোলক রায় বলেন, তিনি এ বছর ২১ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল তিল বীজ চাষ করেছেন। এতে তার ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সাধারণ বীজের তুলনায় এই বীজের উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ। এছাড়া সাধারণ বীজে যেখানে উৎপাদনে সময় লাগে ১১৫ দিন সেখানে এটিতে মাত্র ৮৫ দিনেই তিল ঘরে তোলা যায়। ফলন ভালো হয়েছে। ভালো দাম পেলে অনেক লাভবান হবেন। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে তিল চাষ করবেন বলে জানান।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, তিলের তেলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এই তেল ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমরা তিল চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শের পাশাপাশি বিনামূল্যে তিল বীজ বিতরণ করেছি। তিলের আয়ু ৮৫ থেকে ৯০ দিন। অর্থাৎ কম সময়ে কৃষক এই ফসল ঘরে তুলতে পারেন। তিল চাষে খরচ অনেক কম, আগাছা পরিষ্কার করা ও পানি সেচের তেমন প্রয়োজন হয় না। বাজারে তিলের চাহিদা থাকায় দিন দিন তিল চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। আশা করছি আগামীতে তিল চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।