হিট দিয়ে পাকানো কলায় সয়লাব দুর্গাদহ বাজার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

জয়পুরহাটে অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ব কলা আড়তে এনে হিট (কৃত্রিম উপায়ে তাপ) দিয়ে পাকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। হিটের কারণে কলাগুলোর বাইরের খোসার রং হলুদ ও ভেতরে নরম হয়ে যাচ্ছে। দেখে মনে হবে পাকা কলা।

জয়পুরহাটের সদর উপজেলার দুর্গাদহ বাজার জেলার সবচেয়ে বড় কলার হাট। এখানে প্রকাশ্যে হিট দিয়ে কলা পাকানোর কাজ চলছে। এটি বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভোক্তারা।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হিট দিয়ে পাকানো কলা খেলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে স্বাদ কম থাকে। এরপরও এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার খনজনপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, অপরিপক্ব কলা বাগান থেকে এনে হিট দিয়ে পাকানো হচ্ছে। পরে সেগুলো বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রশাসনের কোনো তদারকি নেই।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক কলা ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ১০-১২ জন ব্যবসায়ী হিট দিয়ে নিয়মিত কলা পাকাচ্ছেন।

হিট দিয়ে কলা পাকানোর বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন দুর্গাদহ বাজারের ব্যবসায়ী ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, কলা পরিপক্ব হতে একটু দেরি হয়। এজন্য আগেই আমরা সেগুলো হিট দিয়ে পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করি।

সদর উপজেলার পাথুরিয়া গ্রামের কলা ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, একটি ঘরে ৪০-৫০ কলার কাঁদি রাখা হয়। সেখানে কাঠের গুঁড়া কিংবা তুষ দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। এরপর ঘরের দরজাটি বন্ধ রাখা হয়। ২৪ ঘণ্টা পর ঘরের দরজা খুলে সেগুলো বের করলে দেখা যায় কলা নরম হয়েছে। এরপর একদিন রাখলেই কলা বিক্রির উপযোগী হয়।

জয়পুরহাট সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিদ বলেন, যদি অপরিপক্ব কলা হিট দিয়ে পাকানোর ফলে পুষ্টিগত কোনো মান থাকে না। ফলে এর কোনো সুফল পাওয়া যায় না। পরিপক্ব কলা স্বাভাবিকভাবে পাকলে পুষ্টিগুণ ভালো থাকে।

জয়পুরহাটের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সুমাইয়া আফরিন জিনিয়া বলেন, হিট দিয়ে কলা পাকানো হলে সেই কলাই কোনো স্বাদ থাকে না। ওই বাজারে কলায় হিট দেওয়ার বিষয়টি জানা ছিল না। তবে এ ধরনে কোনো কাজ কেউ করে থাকলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাহেলা বেগম বলেন, হিট দিয়ে পাকানো কলায় পুষ্টিগুণ কম থাকে আর স্বাভাবিকভাবে যে কলাটি পাকে সেখানে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ ভালো থাকে। তবে হিট দিয়ে পাকানো কলায় তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।

জয়পুরহাটের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখার আহমেদ বলেন, কৃষি গবেষণায় দেখা গেছে হিট দিয়ে পাকানো কলা খেলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। তবে হিট দিয়ে পাকানো কলায় স্বাদ কম থাকে। এরপরও যদি কেউ এ ধরনের কাজ করেন তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।