অবশেষে কুমিল্লা জেলা পরিষদের সেই বিতর্কিত নির্বাহী কর্মকর্তার বদলি

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ।।
প্রকাশ: ২ মাস আগে

অবশেষে স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের কুমিল্লার সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মাত্র তিন দিনের মধ্যেই আলোচিত কুমিল্লা জেলা পরিষদের সেই বিতর্কিত নির্বাহী কর্মকর্তার তাসলিমুন নেছারকে বদলি করা হয়েছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তার বদলির আদেশের কপি সোমবার গণমাধ্যমে এসেছে।

জানা যায়, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চতুর্থ শ্রেণির স্টাফ কোয়ার্টার। নথিপত্রেও লেখা সেখানে একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থাকেন। আদতে তা নয়। সেখানে থাকেন একজন নির্বাহী কর্মকর্তা। অনিয়ম করে কর্মচারীদের বঞ্চিত করে একজন কর্মকর্তার বসবাসের বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ কর্মচারীদের মনেও। অনিয়মের এই গল্প কুমিল্লা জেলা পরিষদের। শুধু এটিই নয়, এই কর্মকর্তার আমলনামায় আছে আরও অনিয়মের ঝুলি। এই প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

ওই কর্মচারীর নাম আকতার হোসাইন। তিনি কুমিল্লা জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী (প্রকৌশল শাখা)। আর কর্মচারী কোয়ার্টার দখল করা কর্মকর্তার নাম তাসলিমুন নেছা। তিনি জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

এসব বিষয় নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দৈনিক আমাদের কুমিল্লা পত্রিকায় ‘কুমিল্লা জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার দখলে কর্মচারীদের কোয়ার্টার’ শিরোনামে একটি লিড সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরেই ২৬ জানুয়ারি জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আরও জানা যায়, কুমিল্লায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এসিল্যান্ড হিসেবে মোট ৪ বছরের বেশি, জেলা পরিষদের সিইওর (একটিং) পদে প্রায় ২ বছরসহ মোট চার বছর তিনি কুমিল্লা আছেন। রাষ্ট্রপতির আদেশে উপসচিব খোন্দকার ফরহাদ আহমদের সাক্ষর করে একটি প্রজ্ঞাপনে ৮ জানুয়ারি নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছাকে বদলির আদেশ দেয়া হয়।

এতে তাসলিমুন নেছাকে কুমিল্লা জেলা পরিষদ থেকে জামালপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। সরকারি বদলির আদেশও মানেন না এই কর্মকর্তা। নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে সেখানে বদলির আদেশ থাকলেও ১৩ দিনেও তিনি যাননি।

সরকারি আদেশকে অমান্য করায় গত ২০শে জানুয়ারি উপসচিব খোন্দকার ফরহাদ আহমদের সাক্ষর করা আরেকটি প্রজ্ঞাপনে তাকে নেত্রকোনা জেলা পরিষদে বদলি করা হলেও তিনি যোগদান করেননি। তাই ৩য় বার আবারও বদলির আদেশ হলে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করতে এবং কুমিল্লা জেলা পরিষদ থেকে অবমুক্ত ঘোষণা করেন।

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আমাদের পরিষদ থেকে অবমুক্তের জন্য অফিস আদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি সেখানে যোগদান করবেন।