আঞ্চলিক সংগঠনে কুবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের বাগড়া

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

মহিউদ্দিন মাহি, কুবি ।। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোতেও হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পছন্দমতো নিজেদের নেতাকর্মী ও অন্যান্যদেরকে সংগঠনগুলোর কমিটির পদে বসাতে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দেওয়া, জোরপূর্বক কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের বিরুদ্ধে। সবশেষ শুক্রবার (১২ আগস্ট) চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের কমিটিকে কেন্দ্র করে রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন।

এদিন সকালে এসোসিয়েশনের নবীনবরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠানের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল বাশার সাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাধারণ সম্পাদক রিফাত আহমেদ, ছাত্রলীগ নেতা রাশেদুল হক, ছাত্রলীগ কর্মী শাহিনুল ইসলাম গালিবসহ কয়েকজন নেতাকর্মী অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে ব্যানার ছিঁড়ে হট্টগোল সৃষ্টি করে। এসময় তারা আয়োজকদের মারধরের হুমকি দেয়। সংগঠনের সভাপতি তারিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসাইনকে কমিটির নেতৃত্ব ছাড়তে সংগঠনের প্যাডে স্বাক্ষর করতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংগঠনের সভাপতি তারেকুল ইসলাম থেকে সাদাকাগজে
জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে নেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনার পর অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে আঞ্চলিক সংগঠনটির সভাপতি তারিকুল ইসলাম ফেসবুকে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। নিখোঁজের প্রায় চার ঘন্টা পর পুলিশের সহায়তায় চট্টগ্রাম থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পরিবার।

ঘটনার বিষয় অস্বীকার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল বাশার সাকিব বলেন, অনুষ্ঠান নিয়ে এসোসিয়েশনের নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছু ঝামেলা হয়েছিল। আমি চট্টগ্রামের ছেলে হিসেবে সমাধান করতে গিয়েছি। সেখানে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

অভিযোগ রয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে আঞ্চলিক সংগঠনটির বর্তমান কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করেও জোরপূর্বক হস্তক্ষেপ করেছেন রেজাউল ইসলাম মাজেদ। এ বিষয়ে সংগঠনটির তৎকালীন সভাপতি আব্দুল জব্বার বলেন, এ কমিটি দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের কারণে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে। সাকিবকে সভাপতি দিতে পরোক্ষভাবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আমাকে দেখা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। কিন্তু এসোসিয়েশনে যারা কাজ করে, আমি তাদেরকেই দায়িত্ব দিয়েছি।

এ ছাড়াও লক্ষ্মীপুর স্টুডেন্টস ক্লাব, কক্সবাজার স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার, কিশোরগঞ্জ জেলা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনসহ অন্যান্য আঞ্চলিক সংগঠনের কমিটি গঠনেও হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ রয়েছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে তিনি বলেন, আঞ্চলিক সংগঠনতো ছাত্রলীগের দেখার বিষয় না। তবু কমিটি দিতে গিয়ে একাধিক প্রার্থী থাকায় ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে তারা আমাদের কাছে আসে, আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করি।

এমন ঘটনা দুঃখজন বলে মনে করেন সম্মলিত আঞ্চলিক জোটের সমন্বয়ক ওসমান ফারুক। তিনি বলেন, সংগঠনের আন্তঃকোন্দলগুলো দুঃখজনক। স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনগুলোতে নেতৃত্বের ভ‚মিকায় সংগঠনের জন্য সবচেয়ে ত্যাগীদের পোস্ট-পদবী। আঞ্চলিক সংগঠনে বিশৃংখলা সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যহত করে। আমরা এমন অনাকাঙ্কিত ঘটনা কখনোই প্রত্যাশা করি না।