এক দুপুরেই তলিয়ে গেল মসজিদ-ঈদগাহ মাঠ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

‘জোহরের নামাজ পড়ছি, এরপর নামাজ পড়তে পারি নাই। মসজিদ নদীতে ভাঙি গেইছে’— এ কথাগুলো বললেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ছকমল হোসেন। এখানে দুধকুমার নদীর তীব্র স্রোতে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠটি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। এক দুপুরেই তলিয়ে গেল মসজিদ-ঈদগাহ মাঠ।

সোমবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার ধরলা নদী পরিবেষ্টিত হলোখানা, ভোগডাঙ্গা, কুড়িগ্রাম পৌরসভা, পাঁচগাছী ও মোগলবাসা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী কমপক্ষে ২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্য কুমরপুর থেকে কাইম বড়াইবাড়ী সড়ক ও সপপাড়া, পাঁচঘন্টি ব্রিজসহ গ্রামীণ রাস্তায় এক হাঁটু পানি ওঠায় লোকজন অটো-মোটরসাইকেল নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছে।

কাইম বড়াইবাড়ীর যুবক সফিকুল (২৫) জানান, রোববার রাতে বৃষ্টির পর রাত ১১টার দিকে ১৬ জনসহ ডিঙ্গি নৌকায় ধরলা নদী পার হতে গিয়ে সবাই নৌকাডুবিতে পরেছি। এ সময় সবাই সাঁতরিয়ে পাড়ে পৌঁছলেও কারো কারো বাজার খরচ, মোবাইল, বিদ্যুৎ বিলের কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পানিতে বিনষ্ট হয়েছে।

উত্তর কুমারপুরের মণ্ডলপাড়া রাস্তায় পানি ওঠায় নারী ও শিশুদের জন্য চলাচলে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে। হাঁটু পানি পাড় হতে গিয়ে হাজেরা বেগম (৫০) জানান, ‘নাগেশ্বরীর চন্ডিপুরে বেটির বাড়িত তিন দিন থাকি আসলং। এলা দেখং রাস্তাত পানি উঠছে। বাড়ির যে কী অবস্থা কাঁই জানে।’

বাবা মনির উদ্দিনকে (৬০) নিয়ে মেয়ে মেঘনা বেগম (২২) ভাসুরের মেয়ে আঁখিকে (৭) নিয়ে বাপের বাড়ি ফিরছিল। সড়কে পানি দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল সে। বাবাকে বলল, বাড়ি থাকি নৌকা আনেন। ভিজি যাবার পাবার নং।

রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় শহরের উপকণ্ঠের মানুষও পড়েছে চরম ঝুঁকির মধ্যে। রাতের মধ্যে আরও পানি বাড়লে বাড়ি ছেড়ে লোকজনকে বাঁধে আশ্রয় নিতে হতে পারে।