কুমিল্লায় পরকীয়া’র জেরে মেয়েকে ‘হত্যা’র অভিযোগ !

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

পরকিয়ার জেরে মা তার মেয়েকে হত্যা করেছে এমন ঘটনার খবর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ এলাকায় পাওয়া গেছে। মাত্র ১১ মাস বয়সী শিশু সুহানার মৃত্যুতে এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়।এ ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ শে ফেব্রুয়ারি) সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।পরে আইনি সকল প্রক্রিয়া শেষে শনিবার লাশ দাফন করা হয়।
অভিযুক্ত মা সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার সুমি (২০)।এই ঘটনাটি অনেকটাই রহস্যময় বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,গত তিন বছর পূর্বে সুমির সাথে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সংরাইশ এলাকার আবুল হোসেন খোকনের ছেলে অহিদুর রহমান সানিল (৩০) এর সাথে বিয়ে হয়।পরে ১১ মাস বয়সী শিশু সোহানার জন্ম হয়।এরপর সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে অমিল দেখা দেয়।পরে স্ত্রী সুমি কুমিল্লা আদালতে একটি নারী নির্যাতন মামলা করেন।এতে গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বামী সানিল হাজির হলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠায়।এতে তিনি বর্তমানে জেলে আছেন।

আরও জানা যায়,স্বামী জেলে থাকা অবস্থায় স্ত্রী সুমি একই এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সোলাইমান (৪৫) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে।পরে প্রেমিক সোলাইমানকে বিয়ে করে ১১ মাস বয়সী শিশু সুহানাকে নিয়ে তার ঘরে চলে যায়।কয়েকদিন ওই বাড়িতে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে শিশু সুহানা খাটের ওপর থেকে নিচে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এমন কথা সুহানার চাচা সাইদুরকে কে জানালে,চাচা সাইদুর বাড়ি থেকে সুহানাকে কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে আহত অবস্থায় দেখতে পায়।চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু সোহানার মৃত্যু হয়।

এতে চাচা সাইদুর তার ভাতিজিকে তারা মেরে হাসপাতালে এনেছে বলে থানায় অভিযোগ দেন।ওই দিন লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।পরে এ ঘটনায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।

চাচা সাইদুর জানান,আমার ভাইয়ের বউ পরকিয়া করে আরেক ছেলের ঘরে ভাতিজিরে নিয়ে কি করছে জানিনা।তার কারনেই আমার ভাতিজির মৃত্যু হয়।তারা গত ১০ দিন আগে আমার ভাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়।এরপর একদিন খবর পেলাম ভাতিজিরে তার মা মারছে।পরে দেখি সত্যি সত্যি গালে কয়কটি চরের চিহ্ন।আমরা তখন ভাতিজিরে নিয়ে আসতে চাইছিলাম।আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারনে আর আনতে পারিনি।যদি তখন আনতাম আজ এই পরিনতি দেখতে হতো না।

অভিযুক্ত স্ত্রী সুমি জানান,আমার মেয়ে পেটে থাকা অবস্থায় আমার স্বামী কোনো খোঁজ খবর নিতোনা।মেয়ে হওয়ার পর স্বামীর বাড়িতে গেলে স্বামী আমাকে অনেক মারধর করতো।পরে যখন মেয়েরে নিয়া চলি আসি,তখন সে আরেকটি বিয়ে করে।এরপর আমিও ওনাকে ডিভোর্স দিয়ে বিয়ে করি।এই সংসারে মেয়েকে নিয়ে থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রান্না ঘরে কাজ করার সময় আমার মেয়ে খাটের থেকে নিচে পড়ে যায়।কান্নার শব্দ শুনে কাছে গিয়ে দেখি ঠোট কেটে গেছে।তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাই।এতে মুটামুটি সুস্থ হয়ে উঠে।শুক্রবার হঠাৎ একটা খিচুনি উঠে,পড়ে দেখি আমার মেয়ে দুনিয়াতে নাই।আমি আমার মেয়েকে মেরে থাকলে যা শাস্তি দিবে তা মাথা পেতে নিবো।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন বলেন,শিশুটির লাশ মর্গে নেওয়ার পর ডাক্তারি সকল প্রক্রিয়া শেষ করে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করেছি।এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায়।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন,আমরা অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছি।রিপোর্ট যখনই পাবো তখনই রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।