কুমিল্লায় বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখীর আবাদ

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ ।।
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কুমিল্লায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখীর আবাদ।গত বছরের চেয়ে এ বছর পুরো কুমিল্লায় সূর্যমুখী চাষ দেড় গুন বেড়েছে বলে জানান কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন।তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা এতে উৎসাহিত হয়ে উঠবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় সূর্যমুখীর চাষাবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় এটা খুব লাভজনক।

এ বছর কুমিল্লার দেবিদ্বার, বরুড়া, ব্রাহ্মণপাড়া, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, দাউদকান্দি, হোমনা, লাকসাম, মুরাদনগর, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা আদর্শ সদর, মেঘনা, মনোহরগঞ্জ, সদর দক্ষিণ, তিতাস, বুড়িচং ও লালমাই উপজেলার ৩১০ জন কৃষক ১১৮ হেক্টর জমিতে প্রণোদনার প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা হাইসান (হাইব্রিড আরডিএস-২৭৫) জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছে।যার প্রতি বিঘায় ফলন হবে ৫ থেকে ৬ মন।যার বাজার মূল্য ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা বাজার সংলগ্ন ডুমুরিয়া এলাকার কৃষক আবদুল জলিল তাঁর ৫০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন।তার জমিতে পাকা ও আধাপাকা সূর্যমুখি ফুল বাতাসে দোল খাচ্ছে। জমির পাশেই তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সের মানুষ ছবি তুলছেন সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে। এতে বেশ বিরক্ত আবদুল জলিল।

তিনি বলেন, গত ২ মাসে বিভিন্ন প্রকার সার ও পানির সেচ দিয়ে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।তবে এখনও ফুল পাকা শুরু করেনি।কিছুদিনের মধ্যে পেকে গেলে সূর্যমুখী ফুলগুলো সংরক্ষণ করে তেল উৎপাদন করে বাজারজাত করবো।

তিনি আরও বলেন, ফলন খুব ভালো হয়েছে।কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে মেডাম প্রায় দিন এসে দেখে যায় ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।তবে কিছু ছেলে-মেয়েরা ফুল দেখতে এসে ফুল ছিঁড়ে ফেলে,তার জন্য খুব কষ্ট হয়।কতক্ষণ এভাবে পাহারা দেওয়া যায়।

সদর দক্ষিণ বিজয়পুরের চৌধুরীখোলা এলাকার কৃষক মোঃ ইয়াছিন বলেন,কিছু লাভের আশায় সূর্যমুখী চাষ শুরু করেছি এবং ভালো ফসলও হয়েছে।কিছু দিন আগে সদর দক্ষিণ কৃষি অফিসের হাবিবুল বাশার স্যার পরিদর্শন করে গেছে।কৃষি অফিস থেকে আমাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।আর এই সহযোগিতা পেলে লাভের মুখ দেখতে পারব।শুনেছি সূর্যমুখী তেলের অনেক দাম। তাই এই ফসল নষ্ট হতে দিতে চাই না।কষ্ট হলেও ফসলের যত্ন করতেছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষকদের আমরা হাতে–কলমে বীজ বপন ও আহরণ কিভাবে করতে তার জন্য অনেক প্রশিক্ষণ দিয়েছি।আর প্রায় উপজেলার কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখা ও প্রয়োজন পরিদর্শন করার কাজ চলমান আছে।এই সূর্যমুখীর চাষে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা প্রতি বিঘায় খরচ করে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।অন্যান্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষে বেশি লাভের প্রত্যাশা অনেক বেশি। সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে আধা লিটার তৈল উৎপাদন সম্ভব।বর্তমানে বাজারে ভোজ্যতেলের আকাশছোঁয়া দাম হওয়ার কারণে চাহিদা বেড়েছে সরিষা ও সূর্যমুখী তেলের।