কুমেক হাসপাতাল : রোগীর স্বজনের আর্তনাদ, ‘ভাই রোগীর অবস্থা ভালো না, জায়গা দেন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

যানজটে আটকা একটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স। অ্যাম্বুলেন্সটির জরুরি সিগন্যাল হর্ন বাজছে। আর মাইকে কান্নার শব্দ। বলা হচ্ছে, ‘ভাই রোগীর অবস্থা ভালো না। জায়গা দেন। আল্লাহর দিকে চেয়ে জায়গা দেন, ভাই। রোগীর অবস্থা ভালো না ভাই।’

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের এমন দৃশ্য দেখেছে যানজটে আটকা শত শত যাত্রী ও চালক। কিন্তু তীব্র যানজটে এমন আকুতিও যেন অরণ্যে রোদন।

সরেজমিনে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আশপাশে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফটকে সামনে দিয়ে অবাধে দাঁড়িয়ে আছে  ব্যাটারিচালিত ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। কোনও নিয়ম বা স্টেশন ছাড়া জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালের সামনে ভিড় করছে অটোরিকশা। আর সে কারণে সড়ক পর্যন্ত গড়ায় যানজট। এর খেসারত দিচ্ছে মুমূর্ষু রোগী ও স্বজনরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফটকের সামনের দোকানগুলোর কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য অটোরিকশাগুলো এখানে দাঁড়ায়। যে কারণে প্রতিদিনই সারা পথ পার হয়ে এসে এখানে আটকে যায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো। আর তখন রোগীর স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সের মাইকে চিৎকার করে করে জায়গা দেবার জন্য বলেন। অনেকসময় মাইকে তাদের কান্না করতেও শোনা যায়। তবুও যানজটেই আটকে থাকেন। অনেক রোগীর স্বজনরা রাস্তায় নেমে যানজট সরাতে গিয়ে অটোরিকশা ও সিএনজিচালকদের হামলার শিকারও হন। অনেক রোগী এখানে এসে যানজটে আটকে মারা যাওয়ার খবরও জানেন তারা। কিন্তু এখনকার যানজটমুক্ত হওয়ার খবর জানেন না।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘ওই সময় জরুরি বিভাগে আনা একজন রোগী মারা গেছেন। তবে তিনি যানজটে আটকে থাকা রোগী কি না তা নিশ্চিত বলতে পারবো না।’

তবে একটি বিষয় সত্য যে কিছু ইমার্জেন্সি রোগীর ক্ষেত্রে অবশ্যই ২ মিনিটও গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া কুমিল্লা মেডিক্যাল হলো এই অঞ্চলের মানুষের শেষ ভরসাস্থল। এখানে মানুষ শেষ উপায় হিসেবে রোগী নিয়ে আসেন। সে ক্ষেত্রে প্রতিটা মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ।

যানজট নিরসনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এসেছি ৯ ফেব্রুয়ারি। আমি জানিও না, আর এই বিষয়ে আমার বলার কোনও সুযোগও নেই। আমাদের প্রশাসন বিভাগ আছে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ডা. মো. মাসুদ পারভেজসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তাকে কল দিয়েও না পাওয়ায় কোনও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।