কুসিক নির্বাচন: কথার লড়াইয়ে শেষ হচ্ছে জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হচ্ছে সোমবার ১৩ জুন। এদিন সকাল থেকে নগরীর ২৭টি কেন্দ্রে একসাথে ইভিএমে ভোটদান সম্পর্কে ভোটারদের ধারণা দিতে মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে প্রার্থী, প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অ্যাজেন্টদের ইভিএম নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়। ১৫ জুন সকাল ৮টা থেকে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০জন। ১৩ জুন বিকেল থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কেন্দ্রে থাকবে সিসি ক্যামেরা। আসন্ন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় যান প্রার্থীরা। নির্বাচনের প্রচারণায় যে ধরনের সহিংসতার শঙ্কা করেছিল নগরীর মানুষ, এবার দুই-একটি ছোট ঘটনা ছাড়া নির্বাচনকে ঘিরে এখনও পর্যন্ত বড় কোনও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। তবে নির্বাচনকে ঘিরে প্রধান তিন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বেশ কথা কাটাকাটি হয়েছে। তিন প্রার্থীর কথার কাটাকাটি দারুণভাবে উপভোগ করেছেন কুমিল্লার মানুষ। সে সাথে নির্বাচন কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে শঙ্কাও আছে সাধারণ মানুষের মনে। নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের ভীতি দূর করা যায়নি।
নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত সাবেক মেয়রকে চোর ও দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। মণ্ডপকাণ্ডে সাক্কুর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে পথসভাগুলোতে অভিযোগ তোলেন তিনি। সে সাথে বিজয়ী হলে কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে সাক্কুর দুর্নীতির শ্বেতপত্র তুলে ধরবেন বলে জনগণের কাছে অঙ্গীকার করেন। তবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাকালে গত বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন, কিন্তু হাইকোর্টে রিটের শুনানি শেষ হয়নি জানিয়ে এলাকায় থেকে যান তিনি। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাবেক মেয়র ও সাবে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু তার প্রচারণাকালে নৌকার প্রার্থীর আনীত অভিযোগগে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেন। শক্তিমত্তা পরীক্ষার জন্য নৌকার প্রার্থীকে স্টেডিয়ামে ডাকেন তিনি। সর্বশেষ রোববার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে সংশয় প্রকাশ করে এ প্রার্থী বলেন, এখনও পর্যন্ত নির্বাচনের প্লেয়িং ফিল্ড সন্তোষজনক। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে নির্বাচনের দিন সিটি করপোশেনের চারদিকের লোকজনকে নগরীতে জড়ো করবেন নৌকার প্রার্থী। এনিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভয় তৈরি হতে পারে। প্রচারণাকালে বিভিন্ন সময়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট চারটি লিখিত অভিযোগ দেন সাক্কু।
স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার রিফাত ও সাক্কুকে একই ব্যক্তির প্রার্থী বলে সমালোচনা করেন। তিনি এ দুইজন নির্বাচিত হলে কুমিল্লার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে না বলে বিভিন্ন সময় উঠান বৈঠক ও পথসভায় বলেন। এছাড়াও ওই দুই প্রার্থীকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলেন তিনি। ইসির সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য কুমিল্লায় বেশ জনপ্রিয় করে তোলে তরুণ এই প্রার্থীকে। এছাড়া তার দেওয়া আধুনিক ইশতেহার কুমিল্লা নগরীর দোদুল্যমান ভোটারদের মধ্যে দারুণ প্রভাব ফেলে।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে পাঁচজন মেয়র প্রার্থী, ১০৮জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩৮জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হাতপাখা পদের মেয়র প্রার্থী রাশেদুুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার ও মনিরুল হক সাক্কু তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ইশতেহার ঘোষণা করবেন না বলে জানান। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুলের ইশতেহারের বিষয়ে জানা যায়নি। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার সাথে সংশ্লিষ্ট ছয় হাজার কর্মী মাঠে থাকবে।