গোমতীজুড়ে মাছ শিকার উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

মাহফুজ নান্টু ॥

মঙ্গলবার বেলা সকাল ১০ টা। কেউ পলো নিয়ে আসছেন কেউবা কনুই জাল। কেউ কেউ আবার খালি হাতেই এসেছেন। তাদের একসাথে হওয়ার উদ্দেশ্য গোমতী নদীতে মাছ শিকার করা।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী কটকবাজার। গোমতী নদীর বাংলাদেশের শুরু ওইখানে। সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয় মাছ শিকার।

খবর নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে গোমতী নদীতে মাছ শিকার চলছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শৌখিন ও পেশাদার মাছ শিকারীরা মাছ ধরতে আসেন।
বছরের ফাগুন চৈত্র মাসে গোমতীর পানি তলানিতে থাকে। মূলত এই কম পানিতে মাছ শিকার করতে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মৎস শিকারীরা এক সাথে হন।
কটক বাজার এলাকার বাসিন্দা ওয়াসিম মিয়া জানান, পানি কমে যাওয়ায় গোমতীতে এখন বাঘাআইড়, বোয়াল, রুই, কাতল, পাঙ্গাস, কালিবাউশ সহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।

জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে মাছ শিকার করতে আসা আবদুর রব জানান, তিনি দুটি কালিবাউশ মাছ পেয়েছেন। মাছ শিকার তার শখ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর তিনি এই সময়টাতে সবার সাথে মাছ শিকারে আসেন। অন্যরা মাছ পেলেও তিনি আজ কোন মাছ পাননি। আবদুর রব আশা করেন দুপুর পর্যন্ত হয়তো মাছ পেয়ে যাবেন।

মাছ শিকার করতে আদর্শ সদর উপজেলার ষোলনল এলাকা থেকে এসেছেন সবুর মিয়া। ২ কেজী ওজনের একটি রুই পেয়েছেন।

সবুর মিয়া বলেন, ভাই আমি গরিব মানুষ। কৃষি কাম কইরা সংসার চালাই। একটা রুইত মাছ পাইছি। একজন আইছিলো গাঙ্গের পাড় মাছ ধরা দেখতো। হেই মিয়া মাছটা এক হাজার টেকা দিয়ে কিনছে।
কনুই জাল থেকে মাছ ছুটে যাওয়ায় আফসোস করলছিলেন সুলতান আহমেদ। তিনি এসেছেন দেবিদ্বার থেকে।
সুলতান আহমেদ বলেন, জাল দিয়ে আমি গত কয়েকদিন আগে ৭ কেজী ওজনের একটি রুই মাছ পেয়েছি। আজ একটা জালে আটকাইছিলো। তবে ছুটে গেছে।

তবে জেলার সুয়াগাজী এলাকা থেকে এসে বাজিমাত করেছেন আবদুর রশীদ। ৩ কেজী ও ২ কেজী ওজনের দুটি কার্পিও মাছ পেয়েছেন। গোমতীর বিবিরবাজার স্লুইসগেটের কাছে পলো দিয়ে মাছ দুটি পেয়েছেন।
এমন আয়োজনে মাছ শিকার নিয়ে আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে দেয়া হয়। সেই ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে মৎস্য শিকারীরা এক হয়ে মাছ শিকার উৎসবে মেতে উঠেন।