চৌদ্দগ্রামে মেম্বারের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীসহ ৮ জনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার চেষ্টা

চাঁদাবাজির মামলা তুলে না নেওয়ার জের : অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার, বিচার দাবি
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে চাঁদাবাজির ঘটনায় দায়ের করা মামলা তুলে না নেওয়ায় একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের (মেম্বার) নেতৃত্ব এক ব্যবসায়ীসহ তাঁর পরিবারের ৮ সদস্যকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে দুইজন নারীও রয়েছেন। শুক্রবার বিকেল ৩ টার দিকে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ওরফে নাসির ডিলারের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতরা সকলেই বর্তমানে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে, হামলায় ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বজলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের কাছে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে আগের চাঁদাবাজির মামলায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়না ছিলো। শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হামলার আহত ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের ছেলে মোতাহার হোসেন জানান, গোপালনগর গ্রামের বজলুর রহমান ওরফে বজলু মেম্বার ও তাঁর সহযোগী পাশের যশপুর গ্রামের আবদুর রহিমের নেতৃত্ব অন্তত ১৫জন সন্ত্রাসী রামদা, ছেনি, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। হামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন, নাসিরের স্ত্রী রহিমা বেগম, ছেলে মোবারক হোসেন, মোতাহার হোসেন, চাচা আলী মিয়া, চাচাতো ভাই আবুল কালাম, মাইন উদ্দিন, চাচাতো বোন ফাতেমা আক্তার গুরুতর আহত হয়েছে।
মোতাহার হোসেন বলেন, পাশের নালঘর বাজারে আমাদের রড, সিমেন্ট, ধান, চালসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। প্রায় ৬ মাস আগে বজলু মেম্বার তার লোকজন নিয়ে এসে আমাদের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে আমরা এ ঘটনায় মামলা করি, কিছুদিন আগে সেই মামলায় আদালত বজলু মেম্বারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরই মধ্যে গত ১৪ জুলাই বজলু ও রশিদ আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে আমার বাবা ও ভাইকে কুপিয়ে ১০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমরা আরেকটি মামলা করি আদালতে। দু’টি মামলা করায় বজলু আমাদের পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বেশ কিছুদিন ধরে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিলো। মামলা তুলে না নেওয়ায় শুক্রবার এই সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে আমাদের হত্যার উদ্দেশে।
মোতাহার আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা যাকে যেখানে পেয়েছে, সেখানেই কুপিয়েছে। আহতদের রক্তে পুরো বাড়িতে যেন রক্তের স্রোত বয়ে গেছে। আমরা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বজলু মেম্বারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে। আগের মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় বজলু মেম্বারকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। শুক্রবার বিকেলে হামলার ঘটনায় আহতরা এখনো থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে সেই মামলাায়ও বজলু মেম্বারকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এছাড়া অন্য জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।