চড়ুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত চারদিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ।।
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

ঝাঁকে ঝাঁকে দল বেঁধে উড়ে গাছের ডালপালায় বসছে শতশত চড়ুই পাখি। চড়ুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত চারদিক। পাখির কিচিরমিচির শব্দে থমকে দাঁড়ায় লোকজন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা হওয়ার আগ পযর্ন্ত যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়ে উঠে। চড়ুই পাখির এমন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের খড়মপুর হযরত শাহপীর কল্লা শহীদ (রহ:) মাজার সংলগ্ন মাঠের কয়েকটি গাছে।

স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে বিকেল পযর্ন্ত মাজার সংলগ্ন স্থান ও গাছপালা এক প্রকার ফাঁকা থাকে। তখনের পরিবেশ থাকে অন্য রকম। বিশেষ করে বিকেল হলেই শুরু হয় চড়ুই পাখিদের আনাগোনা। দল বেধে ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি মাজার সংলগ্ন কয়েকটি গাছে বসে কিচিরমিচির করতে শুরু করে। এই পাখিগুলো সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মনোমুদ্ধকর শব্দে মাতিয়ে রাখে পুরো এলাকা। এ সময় এক অপূর্ব পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

তারা আরো জানান, প্রজনন মৌসুমে চড়ুই পাখির উপস্থিতি কিছুটা কমে যায়। তখন মানুষের বাসাবাড়ির ফাঁক ফোঁকরে এরা বাসা বানায়। ডিম দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ওড়ার বয়স হলে বাচ্চাগুলো বাসা ছেড়ে মা পাখির দেখাদেখি গাছে এসে অবস্থান নেয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাজার সংলগ্ন মাঠে বেশ কয়েকটি আমগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। ওইসব গাছে ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখিগুলো উড়ে এসে বসছে। গাছের এমন কোনো ডাল পালা, পাতা নেই যেখানে চড়ুই পাখি বসে না। পাশাপাশি বিদ্যুৎ এর তার, মসজিদের রেলিংসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনার উপর বসছে। গাছসহ ওই জায়গাকে পাখিগুলো যেন পরম বন্ধু ভেবে আপন করে নিয়েছে। মাজারে আসা ভক্তসহ আশপাশের লোকজনরা ওই পাখির মিলনমেলা দেখে খুশি৷ এই অপরুপ দৃশ্য দেখে অনেকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা যায়।

কিশোরগঞ্জের হেলাল মিয়া জানান, কয়েকজন বন্ধু মিলে মাজার জিয়ারত করতে এখানে আসা। পাখির কিচিরমিচির শব্দে থমকে যান তারা। হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে গাছের দিকে। এতোগুলো চড়ুই পাখির সুললিত কলতানে তাদের যেন উৎফুল্ল করে তুলে। এরপর অনেক্ষণ এই জায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকা হয়। এরপর পাখির ছবি ও ভিডিও করেছেন তারা।

আফজাল হোসেন বলেন, সময় সুযোগ পেলে প্রায় সময় মাজার এলাকায় আসা হয়। এখানে বিকেলে চড়ুই পাখির খেলা করা ও এক গাছ থেকে অন্য গাছে যাওয়া আসা খুবই ভালো লাগে। আবার সন্ধ্যা হওয়া মাত্র পরিবেশ একদম নিরব হয়ে যায়।

সদর উপজেলার চান্দি গ্রামের বোরহান উদ্দিন জানান, একসঙ্গে হাজারো চড়ুই পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে গাছে বসে কিচিরমিচির শব্দে করে এলাকা মাতিয়ে তোলা আসলেই ভালো লাগে। এখানে বিকেলে সময় পেলে এখানে দাঁড়িয়ে থেকে এই দৃশ্য দেখেন তিনি।

পথচারী লিপি আক্তার জানান, এমনিতেই চড়ুই পাখি দেখা হয়। কিন্তু গাছের ডালাপাতায় হাজারো পাখি এভাবে কিচিরমিচির করতে দেখিনি। দেখে খুবই ভালোই লেগেছে।

পৌর শহরের খড়মপুর শাহপীর কল্লা শহীদ রহ. মাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য হাসান খান খাদেম বলেন, প্রতিদিন বিকেল হলেই চড়ুই পাখিগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে এসে গাছে বসে। পাখিগুলোর কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত করে তুলে এলাকা। তবে সন্ধ্যা হলেই নিস্তব্ধ হয়ে যায় এলাকা।