কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামছুল আলমকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ১২ মে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, তাঁকে এর আগে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হলেও তিনি নির্ধারিত সময়ে সেখানে যোগ দেননি। ফলে জনস্বার্থে তাঁকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে, গত ২১ এপ্রিল তাঁকে ওএসডি (অফিসার অন ¯েপশাল ডিউটি) করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে ছামছুলের কালো ছায়া মুক্ত হলো কুমিল্লা সিটি করপোরেশন।
সম্প্রতি সময়ে হঠাৎ করে কুসিক নাগরিক সেবা ও সনদ দেওয়ার ফি বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যে ১৬ ধরনের নাগরিক সেবা ও সনদের ফি বেড়েছে ৫ গুণ পর্যন্ত, যার মধ্যে রয়েছে বেকারত্ব সনদও। ২০ টাকা থেকে একলাফে বাড়িয়ে এসব সনদের মূল্য করা হয় ১০০ টাকা। কুসিকের একটি সূত্র জানায় এ হটকারী সিদ্ধান্তের পেছনে ছামছুলের বড় ভূমিকা ছিল। নগরবাসীর তীব্র ক্ষোভের কারনে গত সোমবার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সিটি করপোরেশন। নাগরিক সেবা ও সনদের ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।
জানা গেছে, বিভিন্ন মেয়াদে সাড়ে ১৬ বছর কুমিল্লায় চাকরি করেছেন ছামছুল। তার চাকরি জীবনের শুরু কুমিল্লায়। দীর্ঘ এই সময়ে কখনও সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড), এনডিসি, কখনও ইউএনও, কখনও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের সচিব এবং সর্বশেষ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হন। কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিতি ছিলেন এই কর্মকর্তা। বাহারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই সর্বশেষ তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হয়েছেন। তার বিনিময়ে তিনি বাহারের মেয়ে সূচনার মেয়র নির্বাচনে নৌকার ভোট চেয়েছেন। এতে আদালত তাকে শোকজ করেন।
কুসিক সূত্র বলছে, মো. ছামছুল আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং বরাদ্দ ব্যবস্থাপনায় তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।