শুক্রবার সকালে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: রকিবুল হাসান জানান, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুলসুমকে উদ্ধার ও আরো তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে, আশুলিয়া থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার থেকে আশুলিয়া থানা পুলিশ মূলহোতা সেই নারী কুলসুমকে (২১) উদ্ধার ও তিনজনকে আটক করে। তারা বর্তমানে আশুলিয়া থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
এ বিষয়ে কুলসুম জানান, ‘আটক রুহুল আমিন এবং শফিক তাকে মামলা না করলে ভয়ভীতি দেখান এবং পাঁচ লাখ টাকা প্রদান ও প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা দিবে বললে তিনি মামলাটি করেন।’
জানা গেছে, গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম নামের এক নারী তার স্বামীকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। পরে এটি ৮ নভেম্বর ঢাকার আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়।
মামলার বাদী স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়েছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার স্বল্প সিংজুরী বাংগালা গ্রামে। বর্তমান ঠিকানা দেখিয়েছেন আশুলিয়ার জামগড়া।
মামলার বাদী কুলসুম বেগম আরো বলেন, ‘অনেক খোঁজাখুঁজি করে তিনি স্বামীর সন্ধান পাননি। পরে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের ৬ আগস্টের জানতে পারেন, এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপুলসংখ্যক অজ্ঞাতনামা লাশ দাফন করেছে। এসব কাগজপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আছে। পরে তিনি হাসপাতালে থাকা কাগজপত্র, ছবি ও ভিডিও দেখে তার স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো: আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুছ ছালাম, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ আছে।
আল আমিন মিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ‘আল আমিন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পিরিজপুরের বাসিন্দা। মামলা দায়েরের প্রায় দুই সপ্তাহ পর তিনি জানতে পারেন, তাকে মৃত দেখিয়ে স্ত্রী মামলা করেছেন। মামলা থেকে আসামির নাম প্রত্যাহার করার কথা বলে নাকি তার স্ত্রী লোকজনের কাছ থেকে টাকা পয়সাও নিচ্ছেন। আল আমিন তখন মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলায় ছিলেন। বিষয়টির সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি জুড়ী থানায় যোগাযোগ করেন। সেখানকার পুলিশ তাকে নিজের এলাকা দক্ষিণ সুরমা থানায় বিষয়টি জানাতে পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে আল আমিন আশুলিয়া থানায় আসেন এবং পুলিশকে জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মেকানিকের কাজের সুবাদে তিনি স্ত্রীসহ জুড়িতে অবস্থান করছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটে। তবে দীর্ঘদিন ধরে তারা সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পিরিজপুরে বসবাস করছেন। এখানেই তিনি স্ত্রী-পরিবার নিয়ে থাকেন। ৫ আগস্ট স্ত্রীর সাথে তিনি সিলেটেই ছিলেন। এর তিন-চার দিন পর ঝগড়া করে মানিকগঞ্জে চলে যান। এরপর আর কুলসুমের সাথে আল আমিনের কোনো যোগাযোগ হয়নি। পরে একজনের কাছ থেকে জানতে পারেন, আমি ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) আন্দোলনে মারা গেছি উল্লেখ করে তিনি একটা মামলা করছেন। ওই মামলার একজন আসামি আমাকে ফোন দিয়া ঘটনাটি বলছে। এটা জানার পর আমি দক্ষিণ সুরমা থানায় গেছি। একটা জিডি করছি, ওসির সাথে পরামর্শ করছি। এরপর ওইখান থেকে আজকে আমাকে আশুলিয়া থানায় পাঠিয়েছে।
এদিকে, আশুলিয়া থানা পুলিশের আটক রুহুল আমিন এবং শফিক তাদের বিরুদ্ধে কুলসুমের অভিযোগ অস্বীকার করেন।