নোয়াখালী প্রতিনিধি : ধর্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পাঁচ বছর বয়সী শিশুকে। শুধু তাই নয়, হত্যার পরও শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং পরে পাশের বাড়ির সৌচাগারের ময়লার ট্যাংকে লাশ গুম করে।
এ ঘটনায় গ্রেফতার নিহত শিশুর চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বর্ণনায় এসব তথ্য দিয়েছেন।
গতকাল রোববার দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি শাহাদাত হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গূহ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামি শাহাদাত হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে শিশুকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় গ্রেফতার আসামি শাহাদাত হোসেনের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন।
শাহাদাতের জবানবন্দির বরাত দিয়ে ওসি জানান, নির্যাতনের শিকার শিশুটি তার চাচাতো বোন। ঘটনার দিন দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির সামনের বরই গাছের নিচে থেকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে যান। সেখানে অন্য কেউ ছিলো না।
ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শাহাদাত শিশুটিকে মুখ ও হাত-পা ছেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তখন শিশুটি চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলে তার নাক-মুখ ছেপে ধরে তাকে মেরে ফেলে। এরপর লাশ বস্তায় ভরে বস্তাটি নিজের কক্ষের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। পরে সন্ধ্যার দিকে পাশের বাড়ির নুর নবীর ঘরের পশ্চিম পাশের সৌচাগারের ময়লার ট্যাংকের ঢাকনা খুলে সেখানে লুকিয়ে রাখেন।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় সন্দেহভাজন হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি শিশুকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যার ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেখানো মতে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের বাড়ির একটি সৌচাগারের ময়লার ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউপির মেঘা গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচ বোনের মধ্যে শিশুটি ছিল সবার ছোট। উদ্ধারের পর শিশুর লাশ শনিবার রাতে চাটখিল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আজ রোববার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্তের পর জানাজা শেষে বিকেলে পারিকারিক কবরস্থানে শিশুর লাশ দাফন করা হয়।
নিহত শিশুর বাবা স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা কিংবা বিরোধ নেই। আমার মেয়ের হত্যাকারী শাহাদাতের ফাঁসি চাই। আইনের ফাঁক-ফোঁকরে যাতে সে কয়দিন পর ছাড়া পেয়ে না যায়। সে ছাড়া পেলে এভাবে আরো ঘটনা ঘটাবে। কারণ সে এমনিতে খারাপ প্রকৃতির।’
এদিকে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধারের পর থেকে চাটখিলের বদলকোট ইউপির মেঘা গ্রামের মৃধা বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। শিশুটির চার বোন ও মা-বাবার আহাজারি থামাতে পারছেন না আশপাশের বাড়ির বাসিন্দা ও আত্মীয়-স্বজনেরাও।
চাটখিল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শিশুকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশগুমের অপরাধে গ্রেফ