প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি হিসেবে মাদকমুক্ত চৌদ্দগ্রাম গড়ার অঙ্গীকার

মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করে রাস্তায় টাঙ্গিয়ে দিন - সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক যুদ্ধ ঘোষণা করুন- পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বিপিএম
আবুল বাশার রানা।।
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

“মাদক ও উগ্রবাদকে কে ‘না‌‌‍’ বলি
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখি”

এই স্লোগানকে সামনে রেখে বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে কুমিল্লা জেলা পুলিশ কর্তৃক চৌদ্দগ্রামের শিবের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে মাদক বিরোধী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
মাদক বিরোধী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি, মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম (বার)। জেলা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত অত্যন্ত সময়োপযোগী ও কার্যকর এই মাদকবিরোধী মতবিনিময় সভায় মাদকের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে সকলকে সতর্ক ও সচেতন করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি উপস্থিত দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন,
কুমিল্লা থেকেই কুমিল্লার পুলিশকে মাদক নির্মূলে উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তাই পুলিশ বাহিনীকেও জিরো টলারেন্স নীতিতে থেকে মাদক নির্মূলে কঠিন ভূমিকা রাখতে হবে। কুমিল্লা সীমান্তবর্তী জেলা। এখানে প্রতিনিয়ত মাদক আসছে। আবার প্রচুর মাদক আটকও হচ্ছে। কিন্তু কারা মাদকের সাথে জড়িত, কারা মাদক ব্যবসা করে, কারা পৃষ্ঠপোষকতা করে এসবের খবর নিয়ে এলাকায় এলাকায় ঘুরে তালিকা সংগ্রহ করে কঠোর অবস্থানে যান। তিনি আরো বলেন জামায়াত শিবির জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে। তারা চাঁদে মানুষ দেখা গেছে এরকম গুজব ছড়িয়ে আতংক সৃষ্টি করে। তাদের বিষয় আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ একসময় আমাদের স্বপ্ন ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দাঁড়িয়ে আজ স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে স্বপ্ন দেখছি। আমাদের এই স্বপ্ন পুরণে একটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাদক। তাই মাদক নির্মূলে আমাদের সকলকে আইনশৃংখলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে।
পুলিশ সুপার মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন- কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দেশের ভবিষৎ কান্ডারি। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থ বিকাশ আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব গুণাবলী রয়েছে। আপনাদের এলাকায় কেউ মাদক কারবারী থাকলে পুলিশকে জানান। আমরা সকলে মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতি হিসেবে মাদক নির্মূলে কাজ করবো এবং মাদকমুক্ত কুমিল্লা গড়বো।মাদক নিয়ন্ত্রণ আমরা করবো, নির্মূল আপনাদের করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক যুদ্ধ ঘোষণা করুন। সামাজিক যুদ্ধের মাধ্যমেই কেবলমাত্র মাদক নির্মূল সম্ভব। মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করুন, তাদেরকে ঘৃণা করুন। সমাজ ও পরিবারের সকল কর্মকান্ড থেকে তাদেরকে দুরে রাখুন।সন্তানদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন, তাহলে তাদের ব্যক্তিগত অনেক কিছু আপনার সাথে শেয়ার করবে। প্রতিদিন না পারলেও মাঝে মাঝে সন্তানদের সাথে খাবার খাবেন। খাবারের টেবিলে তাদের ব্যক্তিগত বিষয় ও লেখাপড়া নিয়ে কথা বলবেন। মাদক, উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ সর্ম্পকে তাদেরকে সচেতন করবেন।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শুভ রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান বিপিএম।
মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাতিক্রমী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র জিএম মীর হোসেন মিরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রহমত উল্যাহ বাবুল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবিএম এ বাহার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আখতার, উজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান মজুমদার মাসুম, কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব হোসেন মজুমদার, শিবের বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হামিদা খাতুন চৌধুরী, মিয়াবাজার তোষণ রফিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক হাসিনা আক্তার, শিক্ষার্থী সাদিয়া সাত্তার প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (সেকেন্ড অফিসার) আলমগীর হোসেন।