প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে অধ্যক্ষকে কলেজে যোগদান করতে দেয়নি কতিপয় শিক্ষক

কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ।।
প্রকাশ: ৩ মাস আগে

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি ফাহমিদা মুস্তফার স্বাক্ষরিত এক আদেশে কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তারকে প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আদেশ দিলেও আজ রোববার অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার অত্র কলেজ এক শ্রেণীর শিক্ষকদের তোপের মুখে কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েও যোগদান করতে পারেননি। রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) নগরীর এ কলেজের অধ্যক্ষ এম নার্গিস আক্তার যোগদান করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন কালেক্টর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম নার্গিস আক্তার। পরে জেলা প্রশাসকের নিয়োগকৃত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা আক্তার। পরে গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চিঠির মাধ্যমে রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম নার্গিস আক্তারকে যোগদানের জন্য কর্মস্থলে যেতে অনুরোধ করে। চিঠিতে বলা হয়, উপযুক্ত বিষয়ের কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, কুমিল্লার ১১/১২/২০২৪ খ্রি. তারিখের গভর্নিং বডির ৩৩তম সভার ২ আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আপনাকে অদ্যই কর্মস্থলে যোগদান করার অনুরোধ করা হলো।

 

অধ্যক্ষকে কলেজ ক্যাম্পাসে বাধা দেওয়া শিক্ষকদের একজন কলেজের জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী বলেন, এটা কোন ছাত্র বা শিক্ষকের বিষয় নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন প্রায় ৬ মাস তদন্ত করে এবং সেই ২৬ টিরও বেশি অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। ২৪ এর নতুন বাংলাদেশে একজন শিক্ষক হিসেবে দুর্নীতিবাজকে প্রতিষ্ঠানে আমরা চাই না।

লিজা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, স্কুলে বহিরাগত লোকেরা লাঠি ও হকিস্টিক নিয়ে ভিতরে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্লোগান দিচ্ছে। এরা কেমন শিক্ষক। একজন অধ্যক্ষকে কলেজে যোগদান করতে দেয়নি। আমরা আমাদের সন্তানদের পড়াশুনা নিয়ে শঙ্কিত।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম নার্গিস আক্তার বলেন, প্রতিষ্ঠানের ৫ জন শিক্ষক সামিউল আলম, উত্তম কুমার, বশির আহমেদ, আখি আলম রকি, রিপন চক্রবর্তী এরা নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য ভাড়া করা সন্ত্রাসী নিয়ে গেইট বন্ধ করে আমাকে কলেজে যোগদান না করার জন্য ঢুকতে দেয়নি। আমি প্রশাসনের কাছে আমার নিরাপত্তা চাই এবং কলেজে আমি আমার কাজ পূর্বের ন্যায় করে যেতে চাই। একই সাথে কলেজের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।

এ বিষয়ে কুমিল্লায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বর্তমান অধ্যক্ষ (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা আক্তারকে মুঠোফোনে একাধিক কল দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, আমি যতটুকু জানি তিনি কলেজে যোগাদানের জন্য যাবে। এখন কেউ যদি ওনাকে যোগদানে বাধা দেয় এটাতো ফৌজদারি অপরাধ। তিনি নিশ্চয়ই এটার প্রতিকার চাইবেন। আমাদের কাছে তিনি এমন কিছু চায়নি।