বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি রোগী স্বজনরা

# নেই কোন নীতিমালা #এককিলোমিটারের ভাড়া নেয় পাঁচ হাজার টাকা #সিভিল সার্জন উদ্যোগ নিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে---ডিসি #তারা অনেক শক্তিশালী, অনেকে কমিশন পায়--কুমেক হাসপাতাল পরিচালক
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ২০ টাকা হলেও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে কোন ভাড়া নির্ধারিত নেই কুমিল্লায়। চালকরা খেয়ালখুশি মতো ভাড়া আদায় করেন রোগী বা নিহত ব্যক্তির স্বজন থেকে। এছাড়াও হাসপাতাল এলাকার সিন্ডিকেট ভূক্ত অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া বাহিরে কোন অ্যাম্বুলেন্সে লাশ বের করতে দেওয়া হয় না। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে এর দায় কুমিল্লার কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান নিতে চায় না। প্রশাসনকে লিখিত ভাবে অবহিত করার তিন বছরেও কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
কুমিল্লা শহরতলীর বারপাড়ার বাসিন্দা মাঈন উদ্দিন বলেন, হাসপাতালের সামনের অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া বাহিরের অন্য কোন অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিতে পারবে না। এটা সরকারি বেসরকারি সকল অ্যাম্বুলেন্স সমিতির নিয়ম। তারা যে ভাড়া বলবে, নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম ভাড়ায় কোন চালক যেতে পারে না। রেকর্ড আছে, রাত তিনটায় একটা লাশ কুমিল্লা মেডিকেল থেকে হাউজিং যাবে। পাঁচ হাজারের কমে কোন ড্রাইবার রাজি হয় না। মানুষ বিপদে আছে।

ক্রীড়া সংগঠক বদরুল হুদা জেনু বলেন, আমার ভাই কবি ফখরুল হুদা হেলালের লাশ বের করার জন্য যখন অন্য হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে ছিলো তখন চালকরা বাধা তৈরি করেছে।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালী বলেন, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে বিষয়টি অবহিত করেছি। আমরা বলেছি, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণ করার জন্য। একই সাথে সড়ক থেকে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং বন্ধ করার বিষয়ে। একই চিঠি সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও বিতরণ করা হয়েছে। কোন উদ্যোগের বিষয়ে সনাক কুমিল্লাকে অবহিত করা হয়নি।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সাথে আমি পারবো না। কারণ তারা অনেক শক্তিশালী। অনেকে কমিশন পায়। রুগী মারা যাওয়ার সাথে সাথে ড্রাইভারদের কাছে তথ্য চলে যায়। রোগীর সামনে, এমনকি লাশের সামনে তারা মারামারি করে। এ সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নীতিমালা করতে হবে। তাহলে এ সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে পারবো। জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, বিআরটিএ কার্যালয় থেকে যদি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে সেটা সম্ভব। কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় তা বাস্তবায়ন করা হবে।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার বলেন, জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করবো বিষয়টা নিয়ে। এটার স্থায়ী সমাধানে নীতিমালা করবো। অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সমিতির সাথেও আলোচনা করা হবে।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, লিখিত ভাবে আমাদের অবহিত করা হলে বা সিভিল সার্জন উদ্যোগ গ্রহণ করলে সমাধানে কাজ করবো।