শেষ পর্যন্ত স্বস্তির ঈদযাত্রায় খুশি চালক ও যাত্রীরা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে শহর থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন মানুষজন। গত বছরের মতো এবারের ঈদুল ফিতরেও সংস্কারকাজ, মহাসড়কের পাশে বাজার থাকা, তিন চাকার যান চলাচলসহ বিভিন্ন কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঈদযাত্রায় যানজটে আটকে চালক ও যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়ার আশঙ্কা করা হয়েছিলো। তবে এরই মধ্যে সেই শঙ্কা কেটে গেছে চালক ও যাত্রীদের।

সকল শঙ্কা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশের ব্যস্ততম এই মহাসড়কে স্বস্তির ঈদযাত্রা করতে পেরে খুশি চালক ও যাত্রীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় একশো কিলোমিটার এলাকা পড়েছে কুমিল্লা জেলায়। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ ঘুরে কোথাও যানজট দেখা যায়নি।

কুমিল্লা-ঢাকা রুটের একটি পরিবহনের বাস চালক নূরে আলম বলেন বলেন, ঢাকা থেকে ফেরার সময় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর, মদনপুর, সোনারগাঁও ও মেঘনা টোলপ্লাজায় একটু ধীরগতি রয়েছে। তবে কুমিল্লা অংশে পুরো মহাসড়কে কোন সমস্যা নেই। এমন অবস্থায় আমরাও খুশি, যাত্রীরাও খুশি।

ঢাকা থেকে বাসে করে কুমিল্লায় আসা যাত্রী আবুল কালাম ওরফে বাচ্চু বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে রওনা দিয়ে মাত্র দুই ঘণ্টায় কুমিল্লা এসেছি। ঈদ মৌসুমে এত কম সময়ে আসা যাবে, ভাবতেই পারিনি। কোথাও যানজট নেই। তবে কুমিল্লায় প্রবেশের আগে টোল প্লাজাসহ কিছু স্থানে ধীরগতি আছে। এমন পরিস্থিতি থাকলে কোন সমস্যা হবে না।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, মানুষের যেন কষ্ট না হয় এজন্য আমরা গত এক বছরের বেশি সময় নিয়ে মহাসড়কে সংস্কারকাজ করে যাচ্ছি। তবে ঈদযাত্রায় সংস্কার কাজের জন্য মানুষের কোন ভোগান্তি হচ্ছে না; কারণ এরই মধ্যে কাজ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সংস্কার করায় বর্তমানে মহাসড়কের কোথাও কোন ধরনের খানাখন্দ নেই। যার কারণে মানুষ নিরাপদ চলাচল করতে পারছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশ, কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, গত বছরের দুই ঈদেও বলা হয়েছিলো যানজট হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে স্বস্তির ঈদযাত্রা করতে পেরেছে মানুষ। এবারও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি এখনো। অতীতের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে। এরই মধ্যে মহাসড়ক নিরাপদ ও যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে বিভিন্ন যানবাহনের মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সাথে সমন্বয় সভা করেছি আমরা। আমাদের অধীনে থাকা ২২টি থানা/ফাঁড়ির দুই পালায় ৬৪টি টহল দলের পাশাপাশি যেকোন দুর্ঘটনা সামাল দিতে ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। প্রস্তুত রয়েছে সরকারি ৫টি এবং বেসরকারি ১২টি রেকার টিম। আছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার রেকার টিমও। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। কোথাও কোন গাড়ি বিকল হলে বা দুর্ঘটনার কবলে পড়লে দ্রুত সেটি অপসারণ করা হচ্ছে। আশা করছি আমরা যে কোন সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে পারবো। আর এই সময়ে মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোন যানবাহন না থামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে

মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ আরো বলেন, মহাসড়ক এখন সম্পূর্ণ ভালো হওয়ায় নির্বিঘ্নে গাড়ি চালাতে পারছেন চালকরা। আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের বাইরে ভিন্ন পোশাকে মহাসড়কে থাকছে ১০০ জন হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশ সদস্য। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত আমাদের এলাকাা মহাসড়ক চাঁদাবাজ মুক্ত, নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে হাইওয়ে পুলিশ বদ্ধপরিকর রয়েছে। কোথাও কোন অনিয়ম হলে কাউকে ছাড়া দেওয়া হবে না। পুরো রমজান মাস জুড়ে আমাদের কয়েকটি গোয়েন্দা টিম মাঠে এসব বিষয় নজরদারি করছে। আশা করছি এবারও মানুষকে নিরাপদ ঈদযাত্রা উপহার দিতে পারবো।
এদিকে, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবার নিজেই একটি স্পেশাল টিমসহ মহাসড়কের শৃঙ্খলা তদারকি করবেন বলে জানিয়েছেন।