সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৪ ডিগ্রিতে নামলো চুয়াডাঙ্গায়

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। টানা দুদিন জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। নেই সূর্যের দেখা। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি বইছে হিমেল বাতাসও।

কনকনে শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। শুক্রবার ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ হিসেবে শূন্য দশমিক ৬ ডিগ্রি কমেছে শনিবারের তাপমাত্রা। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

এদিকে উষ্ণতার খোঁজে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে ভিড় করছেন মানুষ। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না।

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কে অবস্থিত চা-দোকানি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এত শীত কোনো দিন অনুভূত হয়নি। বাতাসের কারণে দোকানে দাঁড়ানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’

চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর এলাকায় ফেরি করে মুরগি বিক্রির জন্য বেরিয়েছিলেন বারেক আলী। তবে হাড় কাঁপানো শীতে মুরগি বিক্রি না করেই বাড়ি ফিরে যান। বারেক বলে, ‘মুরগি বিক্রির না করেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কারণ প্রচন্ড শীতে আমারও কষ্ট হচ্ছে। আবার মুরগিগুলোও মরে যেতে পারে।’

বেসরকারি চাকরিজীবী শারমিন মালিক বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা থেকে অন্যদিন ভোরে মেহেরপুরে অফিসের জন্য বের হই। কিন্তু আজ একটু বেলা করে বের হয়েও প্রচুর শীত লাগছে। রোদও ওঠেনি সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস তো আছেই।’

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের কাঁচামালের আড়তদার ব্যবসায়ী মাফি বলেন, খুব সকালে আমি আড়তে যাই। কিন্তু আজ সাড়ে ১০টার দিকে রওনা হয়েছি। এ শীত আমাদের ব্যবসায় প্রভাব ফেলছে।’

জবান আলী নামের এক দিনমজুর বলেন, ‘ভোরে কাজে যেতে পারিনি শুধু অতিরিক্ত শীতের কারণে। ঘরেও জমানো অর্থ নেই। খুব বিপদে আছি। আল্লাহ ভরসা।’

এদিকে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশুওয়ার্ডসহ অন্য ওয়ার্ডে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। আর প্রতিদিন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হচ্ছে শতাধিকের মতো।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, তীব্র শীতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিদিন ৩-৪০০ শিশুকে আউটডোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন নিউমোনিয়া রোগী সংখ্যাও বাড়ছে। এছাড়া অন্য রোগীও আমাদের দেখতে হচ্ছে। যার কারণে হিমশিম অবস্থা।