সিরিয়া-তুরস্কে শক্তিশালী ভুমিকম্পে নিহত বেড়ে তিন শতাধিক

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপে সিরিয়া সীমান্তের কাছে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০০ ছাড়িয়েছে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তাদের দেশে ৭৬ জন নিহত হয়েছে। আর সিরিয়ায় ২৩৭ জন।

মার্কিন ভূতাত্তিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। কয়েক মিনিট পর আবারও একাধিক আফটার শক। ভূমিকম্পের উৎপস্থিতস্থল ছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। গভীরতা ভূপৃষ্ঠে থেকে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটারে।

এমন পরিস্থিতিতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশটিতে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, কাহরামানমারাস, গাজিয়ানতেপ, সানলিউরফা, দিয়াবাকির, আদানা, আদিয়ামান, মালতা, হাতায় এবং কিলিসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শহরগুলোর চারদিকে ধ্বংসস্তূপের চিত্র। ভবন ধসে অনেকে চাপা পড়েছে। নিখোঁজ সদ্যদের হন্য হয়ে খোঁজ করতে দেখা গেছে পরিবারের সদস্যদের।

তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত তারা ৫ শতাধিক আহতের খবর পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এদিকে তুরস্কের কোথাও কোথাও তুষারপাত আর বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। কনকনে ঠান্ডা বাতাস পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

একজন উদ্ধারকারী বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় ইস্তাম্বুলের ফ্লাইট সাময়িক সময়ের জন্য বাতিল করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা ভূমকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহজে পৌঁছাতে পারছি না।

এই পরিস্থিতিকে ট্র্যাজেডি অ্যাখ্যা দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইায়্যপ এরদোগান টুইট বার্তায় বলেন, ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবো আমরা’। নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি।

দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে ইতোমধ্যে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

তুরস্কের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভূমিকম্পে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলেপ্পো, হামা, লাতাকিয়া এবং তারতুসে নিহতে ছাড়িয়েছে দুই শতাধিক। আহত অনেকে। হাসপাতালে লাশের মিছিল।

আবহাওয়াবিদ ব্র্যান্ডন মিলার বলেছেন, ভূমিকম্পের কম্পন লেবানন পর্যন্ত কয়েকশ কিলোমিটার দূরে অনুভূত হতে পারে।

উল্লেখ্য, তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত। এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।

সূত্র: বিবিসি