স্ত্রীর লাশ মিললেও এখনও নিখোঁজ কনস্টেবল সোহেল ও তাদের দুই সন্তানের মরদেহ

নদীতে ঘুরতে গিয়ে বাল্কহেড ধাক্কায় ট্রলার ডুবি, মুহুর্তেই শেষ একটি পরিবার
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

সৈয়দ খলিলুর রহমান, দেবিদ্বার।।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পর্যটকবাহী ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ কনস্টেবল সোহেলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। গতকাল শনিবার দুপুর এক’টায় সোহেলের স্ত্রী মৌসুমী আক্তারের (২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে বাড়িতে এনে রাতেই লাশ দাফন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তার খালাতো ভাই শরিফুল ইসলাম। তবে কনস্টেবল সোহেল রানা (৩২) ও তার তাদের দুই ছেলে-মেয়ে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে।
কনস্টেবল সোহেল দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ পূর্বপাড়ার সাবেক সেনা সদস্য আবদুল আলিমের ছেলে। চাকরি করতেন ভৈরব হাইওয়ে থানায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে সোহেল দ্বিতীয়। ছোট ভাই মাসুদ থাকে সি্গংাপুরে। ছেলে, ছেলের বউ ও নাতী-নাতনীদের দুঃসংবাদ পেয়ে শুক্রবার রাতেই স্ত্রী ও স্বজনদের নিয়ে ভৈরব ছুটে গেছেন আবদুল আলিম।
সোহেলের প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ সাদেক মেম্বার বলেন, এ ঘটনা শুনে আমিসহ সোহেলের বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনরা ভৈরব ঘটনা স্থলে যাই। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনীদের না পেয়ে তার বাবা-মা বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তাদের চিৎকারে চোখের পানি আটকে রাখা দায়।


সোহেলের চাচাত ভাই ইমরান জানায়, এসএসসি পরীক্ষা শেষে গত সপ্তাহে সোহেলের বাসায় বেড়াতে যায় ভাগনি মারিয়া আক্তার। তার অনুরোধে শুক্রবার বিকেলে সোহেল তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ট্রলারে আশুগঞ্জ সোনারামপুর চরে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরবে ফেরার পথে মাঝ নদীতে নৌকাটিকে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। এসময় ট্রলারে ১৬ জন যাত্রী ছিল। তাৎক্ষনিক স্থানীয় লোকজন ও নৌ পুলিশ ৯/১০ জনকে উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং তোফাজ্জল হক (২২) নামের এক যুবককে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনা কালে সোহেলের ভাগনী মারিয়া আক্তারকে অন্য আরেকটি ট্রলার এসে জীবিত উদ্ধার করলেও কনস্টেবল সোহেল রানা, তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার, মেয়ে মাহমুদা সুলতানা ইভা এবং ছেলে রাইসুল ইসলাম নিখোঁজ হয়।