৩৬ মণ ‘স্বপ্নরাজ’র দাম ২০ লাখ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

নাম তার ‘স্বপ্নরাজ’। খাবারের তালিকাটাও অনেকটা রাজার মতোই। আপেল, আঙুর, কলাসহ নানা ফলমূল ছাড়া তার চলেই না। চার বছরে ওজন হয়েছে প্রায় ৩৬ মণ।

আসছে ঈদুল আজহায় চার বছর বয়সি স্বপ্নরাজ নামের বিশালাকৃতির ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক মোজাম্মেল হক বাবু। তিনি গরুটির দাম চেয়েছেন ২০ লাখ টাকা। কুরবানির ঈদ সামনে রেখে ‘স্বপ্নরাজ’ নামের এই গরুটিকে দেখতে প্রতিদিনই শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে।

সরেজমিন গরুর মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘স্বপ্নরাজ’ নামের ওই গরুর বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। গরুটিকে সম্পূর্ণ সুষম খাদ্য যেমন, কাঁচা ঘাস, খৈল, ছোলা, ভুট্টার ভুসি, মসুর ডালসহ ভালো মানের খাবার খাওয়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বপ্নরাজ নামে এই গরুকে প্রতিদিনই আঙুর, আপেল, কলাসহ নানা জাতের দামি ফলমূল খাওয়ানো হয়েছে। আর রোগজীবাণুর হাত থেকে বাঁচাতে প্রতিদিন সাবান, শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করানো হয়। গরুটিকে অনেকটা নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করে এসেছেন তারা। খাওয়ানো হয়নি কোনো ওষুধপত্র। পুরোপুরি দেশীয় পদ্ধতিতে বড় করা হয়েছে বলে দাবি করেন গরুর মালিক।

বাঘলবাড়ি গ্রামের আবদুর রহিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের এলাকায় এত বড় ষাঁড় গরু এর আগে কখনো দেখিনি। ষাঁড় গরুটি খুব ধীরস্থির প্রকৃতির। দেখতে এতই সুন্দর লাগে যে প্রতিদিনই একবার হলেও ষাঁড় গরুটি দেখতে ওই বাড়িতে যাই। গা নেড়ে আদর করে আসি।

মালিক মোজাম্মেল হক বাবুর স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুন  বলেন, গরুটি আমাদের পরিবারের একজন। তাকে আমরা সন্তানের মতোই বড় করে তুলেছি। ‘স্বপ্নরাজ’কে বিক্রি করতে মন চায় না। কিন্তু এত বড় ভারি গরু রাখাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া খরচও বেড়ে গেছে। তাই এবার বিক্রি করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মোজাম্মেল হক বাবু যুগান্তকে বলেন, জন্মের পরই বাছুরটির শরীরের গঠন দেখে মায়ায় পড়ে যাই। সন্তানদের নিয়ে যেভাবে প্রতিটা বাবা-মা স্বপ্ন দেখে ঠিক সে রকম স্বপ্ন দেখেছিলাম গরুটিকে নিয়ে। সে জন্য নাম রেখেছিলাম ‘স্বপ্নরাজ’। আমি ও আমার স্ত্রী মিলে অনেক যত্ন করে বড় করেছি তাকে। গরুটির দাম চেয়েছি ২০ লাখ। তবে আলোচনা সাপেক্ষে কিছুটা কম বেশি হলে ‘স্বপ্নরাজ’ নামে বিশালাকৃতির এই ষাঁড় গরুটি বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি।

গরুটির ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভ্যাটেরিনারি সার্জন ডা. রোকনুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, গরুটি ব্যাপারে জানার পর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হয়েছে। গরুটির ওজন প্রায় ৩৫ মণ। খুব যত্নসহকারেই গরুটিকে বড় করেছেন তারা। এ ছাড়া খামারের মালিক যেন প্রকৃত দাম পান সে জন্য প্রাণিসম্পদ অফিসের ফেসবুক পেজেও ছবি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।