কুমিল্লায় গায়ে হলুদের রাতে প্রেমিকার আত্মহত্যার কথা শুনে বিষপান করে প্রেমিক এখন হাসাপাতালে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁওয়ে গায়ে হলুদের রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক তরুনী। এখন প্রেমিকের কাছে পৌঁছলে সেও বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বর্তমানে প্রেমিক কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ৪ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তরুণীর নাম শারমিন আক্তার (২৩)। তার গ্রামের বাড়ি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কাকিয়ারচর এলাকার। নগরীর বাগিচাগাও এলাকায় তারা ভাড়া থাকতেন। অপর দিকে, আহত প্রেমিক মো: রনি একই উপজেলার পালপাড়া এলাকায় মৃত তাজুল ইসলামে ছেলে । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমেদ সনজুর মোর্শেদ।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি বলেন, এদিন ভোর রাতের দিকে খবর পাই বাগিচাগাঁও এলাকায় এক তরুনী আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আমরা পৌঁছাবার আগেই স্বজনরা মরদেহ নামিয়ে পাশের ডায়াবেটিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তরুনীকে মৃত ঘোষণা করলে স্বজনরা এ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ বাসায় নিয়ে যায়। আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি ২০২০ সালের শেষের দিকে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। মেয়ের ভাই আমেরিকা থাকে। তাই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার জন্য ২০২৩ সালের মে মাসের ৫ তারিখ নির্ধারণ করা হয়। বিয়ের আগের রাতে ৪ মে বৃহস্পতিবার হলুদ অনুষ্ঠান শেষ করে নিজের রুমে এসে দুটি ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে তরুনী। তবে ঠিক কি কারনে এ ঘটনা ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত না। ময়নাতদন্তের রিপোর্টসহ অন্যান্য তদন্ত শেষ হওয়ার পর এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবে বলে মনে করছি।

নিহতের পরিবার সূত্র জানায় যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হলুদ অনুষ্ঠানে শারমিন আক্তারের সাথে দেখা করে তার প্রাক্তন প্রেমিক মো. রনি। দলবল নিয়ে এসে রনি তার প্রেমিকা শারমিন আক্তারকে এ বিয়ে না করার জন্য অনুনয় বিনিময় করে। পরে সবার মধ্যস্থতায় প্রাক্তন প্রেমিক হলুদ অনুষ্ঠান থেকে চলে যায়। তারপর ভোর রাতের দিকে হলুদ অনুষ্ঠান শেষ হলে নিজের বাসায় ফিরে নিজের শয়ন কক্ষে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে শারমিন।

অপর দিকে, প্রেমিক মো: রনি শুক্রবার সকালে প্রেমিকার মৃত্যু সংবাদ শুনে বিষপান করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন

প্রেমিক রনির মায়ের দাবি,মেয়েটির সাথে আমার ছেলে বিবাহ হয় এক বছর আগে । কিন্তু আমাদের পরিবারের অবস্থা ভালো না হওয়ায় আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে রাজি হয়নি মেয়ের পরিবার। পরবর্তীতে ডিভোর্স ছাড়াই আমার বউমাকে অন্য স্থানে বিয়ে দিতে বাধ্য করেছে শারমিনের ভাই । আমাদের পুত্রবধূ নিহত শারমিন ২ মাসের অন্তঃসত্বা ছিল। স্ত্রীর মারা যাওয়ার কথা শুনে আমার ছেলেও সকালে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে টায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কোতয়ালী মডেল থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।