দেড় বছরেরও উদ্বোধন হয়নি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ, চুরি হয়ে গেছে অধিকাংশ মালামাল

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে সাড়ে ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ। কাজ শেষে বিল উত্তোলনের পর জামানতের টাকাও ফেরত নিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অথচ এরই মধ্যে সময় চলে গেছে দেড় বছর। এখনো উদ্বোধন হয়নি। উদ্বোধনের আগেই চুরি হয়ে গেছে অনেক মূল্যবান মালামাল। ভেঙ্গে গেছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের স্লিপার, টয়লেটের নানা আসবাবপত্র, বেসিন, পানির কল, দরজার অংশ বিশেষ। এমন চিত্র কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের নব নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের। কলেজ অধ্যক্ষ জানিয়েছেন অডিটরিয়ামের কাজ শেষে একসাথে উদ্বোধন করা হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভিক্টোরিয়া কলেজের অর্থনীতি ভবনের সামনে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টি নন্দন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন হয়নি। চুরি হয়ে গেছে পানির মটর, নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষের জিনিসপত্র, টয়লেটের মালামাল। ভেঙ্গে গেছে স্লিপার ও দোলনার অংশ বিশেষ। খুলে নেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক লাইট। এখানে অবাধে যাতায়াত করছে বহিরাগতরা।
ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রবিন এন্টার প্রাইজ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নিমার্ণ করেন। এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. রাহাত জানান, আমি ভিক্টোরিয়ার ছাত্র। ডিজাইন ও চুক্তিতে যে সকল কাজ ছিলো সব শর্তপূরণ করে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছি। প্রবেশের রাস্তা বাজেটে ছিলো না, আমার নিজস্ব অর্থায়নে করে দিয়েছি। গতবছরের প্রথম দিকে কাজ করেছি। কাজ বুঝিয়ে দিয়েছি। আমার ৩৭ লক্ষ টাকা বিল তুলে নিয়েছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জামানতের টাকাও বুঝে পেয়েছি।

কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুবা আক্তার সুমি বলেন, কলেজে বাহিরের খারাপ ছেলেরা প্রবেশ করার কারণে নানা সমস্যা হয়। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন মালামাল তারা চুরি করেছে। এটা যে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ তা জানতাম না। এটার কি কাজ করা হয়েছে, তার বিস্তারিত কোন লিপিবোর্ড নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফ জামিল বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকল কাজ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আমরা ৩৭ লক্ষ ৬৬ হাজার ৫৬৪ টাকা বুঝিয়ে দিয়েছি। তারা সে জামানত মূল্য রেখেছে তাও নিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর দেখাশোনার দায়িত্ব তাদের( কলেজের)।

এ প্রসঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, কাজ শেষ হয়েছে আরো আগে। এখন কলেজ অডিটরিয়ামের সংষ্কার কাজ চলছে। এ কাজটা শেষ হলে এমপি মহোদয়কে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও অডিটরিয়াম একসাথে উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের আগে ঠিকাদার একটু মুছে দিয়ে যাবে। সুন্দর খেলার মাঠ তৈরি করেছি। এমপি সাহেব এটা এখনও দেখেনি। কেচি গেট না থাকার কারণে আর বহিরাগতরা প্রবেশের করার কারণে কিছু মালামাল নিয়ে গেছে।