বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী ও জনতার উপর সশস্ত্র হামলায় অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দেওয়া কুমিল্লা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল আত্মগোপনে ভারতে থাকলেও সেখান থেকে পালিয়ে এখন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থান করেছেন। গত ২৭ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পৌঁছান বলে জানা যায়।
কুমিল্লা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুলের বিরুদ্ধে কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানা ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় ১৫ টি মামলার মধ্যে অন্তত ১৪ টি মামলায় তার নাম উপরের সারিতে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা মামলাও।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী ও জনতার উপর সশস্ত্র হামলায় অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঝাগুরঝুলিসহ বিভিন্ন এলাকায় কালো মাস্ক পড়ে প্রকাশ্যে রিভলবার হাতে অস্ত্র চালাতে দেখা গেছে। তার অস্ত্রবাজির ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
সাবেক চেয়ারম্যান টুটুল এনসিসি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের টাকা তুলে নিয়ে নেন। ব্যাংকের তার হিসাব নিয়ে কোন বিধি নিষেধ না থাকায় সবকিছু সহজেই তিনি নিজের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করেন। তাছাড়া তার পাসপোর্টও বাতিল হয় নি।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে আমিনুল ইসলাম টুটুল প্রথমে দেশে পলাতক থেকে পরে ভারতে পালিয়ে যান। টুটুলের পাসপোর্টে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা থাকলেও ভারতে প্রবেশের সিল ছিল না। ভারতে থাকার প্রায় দুই মাস পর পাচারকারীদের মাধ্যমে আবার বাংলাদেশে প্রবেশ করে সিল নিয়ে ভারতে চলে যান। গত ২৭ অক্টোবর সকালে বিমানে তিনি অস্ট্রেলিয়া পৌঁছান।
জানা গেছে, কুমিল্লার দানব সাবেক এমপি বাহারের দাপটের অংশীদার আমিনুল ইসলাম টুটুল সর্বশেষ ২০১৯ এর জুনে এবং গত এপ্রিলে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এমপি বাহারের ভয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সাহস পায় নি। করোনা ভাইরাসের প্রকোপের সময় সাধারণ মানুুষের জন্য বরাদ্দ খাদ্য সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করে দেওয়াসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে আমিনুল ইসলাম টুটুল ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
গত নির্বাচনের সময় টুটুলের অপকর্মের ছবি ও তথ্য হোয়াটস অ্যাপে ভাইরাল হলেও গত ৬ এপ্রিল কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে সাবেক এমপি বাহার উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিতসভায় ভোটের নাটক সাজিয়ে অর্থের বিনিময়ে টুটুলকে পুনরায় মনোনয়ন দেন। চাউর হয় নির্বাচন হলে যে টাকা খরচ হতো সে টাকা দেওয়া হয় বাহারের হাতে।