কিস্তির জামিনদার না হতে চাওয়ায় টিপু সুলতানকে হত্যা, দাবি পরিবারের

স্টাফ রিপোর্টার।।
প্রকাশ: ১ মাস আগে

কুমিল্লার সদর দক্ষিণের মোহনপুর এলাকায় এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে নিখোঁজ হওয়া টিপু সুলতান (২৯) নামের এক যুবকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় টিপু সুলতানের বাবা দেলোয়ার হোসেন (৫০) রূপা আক্তার (২৯) ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রূপা আক্তারকে আটক করা হয়েছে।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন কুমিল্লার গাবতলী এলাকার বাসিন্দা এবং কৃষিকাজের সাথে জড়িত। তার ছেলে টিপু সুলতান স্থানীয় প্রবাসী বশির উদ্দিনের স্ত্রী রূপা আক্তারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ রাখতেন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে রূপা আক্তার টিপু সুলতানকে তার বাড়িতে এসে কিস্তির বইতে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর টিপু সুলতান বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে আর ফিরে আসেননি। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি সকালে দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ছেলের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রূপা আক্তারের ভাড়াটিয়া বাড়ির একটি কক্ষে টিপু সুলতানের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় লোকজন রূপা আক্তারকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এ ঘটনায় রূপা আক্তার জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারি দুপুর সোয়া ১টার দিকে টিপু সুলতান তার বাড়িতে এলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রূপা আক্তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে টিপু সুলতানের লাশ দেখতে পায়। পরে সে টিপু সুলতানের হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে বাড়ির একটি কক্ষে রেখে দেয়। পরে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়

এদিকে এ ঘটনায় নিহত টিপু সুলতানের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার ছেলের সাথে রূপ আক্তারের কোন পরকীয়া সম্পর্ক ছিল না। আমার ছেলে মাটি ক্যারিংয়ের কাজ করতো। ঘটনার দিন দুপুরে আমার ছেলেকে রুপার পরিবার কল দিয়ে বলে তাদের একটি কিস্তির জামিনদার হতে। আমি আমার ছেলেকে নিষেধ করেছিলাম। আমার ছেলে বলেছিল আমাকে যে সে যাবে না। এই কথা বলে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

এরপর তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আর পাইনি। পরে একদিন পরে রুপার স্বামী বিদেশ থেকে ফোন দিয়ে বলে আমার ছেলের লাশ তাদের বাসায় পড়ে আছে। ছেলে কিভাবে রুপার বাসায় গেল সেটা আমি জানি না৷ আমি বর্তমান সরকারের কাছে এই হত্যার বিচার চাই।

এই বিষয়ে টিপু সুলতানের বোন বলেন, আমার ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। রুপা আমার ভাইকে কিস্তির জামিনদার হতে বলেছিলো। রুপা আমার ভাইকে তার বাসায় নিয়ে গেছিলো। আমরা আমার ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সদর দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে একজনকে আটক করেছি। আমরা ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করছি৷ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।