কুমিল্লায় মামলা প্রত্যাহার না করায় বাদী ও স্বাক্ষীদের কুপিয়ে আহত, হাসপাতালে ভর্তি ৪ জন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ মাস আগে

 

কুমিল্লা শহরের কোতোয়ালি মডেল থানার বলরামপুর এলাকায় জমি-জমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে মামলা প্রত্যাহার না করায় এক কৃষক পরিবারকে নৃশংস হামলার শিকার হতে হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুপুর ১২টার দিকে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয় অন্তত চারজনকে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহতরা হলেন—সোহাগ, আরিফ, ফারজানা আক্তার এবং হোসনেয়ারা বেগম।

আহতের স্বজন ফরিদ মিয়া কোতোয়ালি মডেল থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি পেশায় একজন কৃষক এবং ঘটনার আগে থেকেই বিবাদীদের সঙ্গে তাদের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের কারণে আসামিরা তার ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধরের সুযোগ খুঁজছিলেন। প্রায়ই অকারণে ঝগড়ায় জড়িত হয়ে তারা হয়রানি করতেন। অভিযুক্তরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী প্রকৃতির এবং গায়ের জোরে নানা অপকর্ম করে বেড়ান, যার ফলে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পান না।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘটনার দিন সকালে আরিফ, সোহাগ এবং হাসান পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে ধান কাটতে যান। পরে ধান বাড়িতে আনার কিছু সময় পর, দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্তরা দা, ছেনি, লাঠি, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়ির ভেতরে অনধিকার প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি শুরু করে এবং বাধা দিলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার দক্ষিণ বলরামপুর এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহ আলম (৫০), মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন (৪০), শাহ আলমের ছেলে পাভেল (৩০), মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ (২৩), আবুল হোসেনের ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (২৫), আবুল হোসেনের আরেক ছেলে মো. শাকিল (১৯), মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে মো. ইয়াছিন (৩৫), মৃত সুরুজ মিয়ার আরেক ছেলে আব্দুস সালাম (৩২), সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী আখি বেগম (২৫), এবং শাহ আলমের স্ত্রী পারভীন আক্তার (৩৮)। এছাড়া, সদর দক্ষিণ উপজেলার হারাতলী এলাকার মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে মো. সোহাগ (৩৫)।

ফরিদ মিয়া আরও দাবি করেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় দাপট দেখিয়ে আসছে। আগে তারা আওয়ামী লীগের ছায়ায় ছিল, বর্তমানে বিএনপির নাম ব্যবহার করে মাদকব্যবসা ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত। স্থানীয় প্রভাবশালী কালাকবিরের গ্যাংয়ের সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে একটি চৌকস টিম মাঠে কাজ শুরু করেছে। দ্রুত জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।