কুমিল্লায় তীব্র গরমে পুড়ছে ফসলের মাঠ, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ ।।
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে পুড়ছে ফসলের ধান ও আমের মুকুল। পানি না থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ। আর তীব্র তাপদাহে আমের গুটি ঝড়ে পড়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন আম চাষিরা। এমনিতেই এ বছর মুকুল এসেছিল কম, গাছে যে কটা আমের গুটি টিকে আছে সেগুলোর বৃদ্ধিও ঠিকমতো হচ্ছে না তাপদাহের প্রভাবে। ঝরেও পড়ছে গুটি। এ সমস্যা থেকে বাঁচাতে প্রয়োজনে গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শ কুমিল্লা বৈজ্ঞানিক প্রধান কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. জামাল উদ্দিনের।
এ দিকে আবহাওয়া অফিস কুমিল্লা জানান, রবিবার বিকেল ৪টার দিকে কুমিল্লায় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার কুমিল্লার ১৭ টি উপজেলায় বোরো ধানের লক্ষ অর্জন ছিলো ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৯০ হেক্টর। তাপপ্রবাহ থেকে এসব ফসল রক্ষার্থে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কুমিল্লা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। ফসলের কী ধরনের রোগ হতে পারে তা বুঝানো হচ্ছে। হিটশক রোগের লক্ষণ বলতে তাদে মতে, আক্রান্ত ধান গাছের পাতায় প্রথমে ছোট ছোট কালচে বাদামি দাগ দেখা যায়, ধীরে ধীরে দাগগুলো বড় হয়ে ধূসর বা সাদা ও পাতার কিনারা বাদামি রঙ ধারণ করে। অনেকটা চোখের মতো দেখতে দাগগুলো লম্বাটে হয়। একাধিক দাগ একসঙ্গে মিশে শেষ পর্যন্ত পুরো পাতাসহ গাছ মারা যেতে পারে। কৃষি বিভাগ নিয়মিত কৃষকদের সঙ্গে গাছের ছায়ায় বৈঠক করে তাপপ্রবাহ থেকে ফসল বাঁচাতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। বৈঠক থেকে ফসল রক্ষার্থে তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে ধানের ফুল থেকে ধান শক্ত না হওয়া পর্যন্ত গাছের গোড়ায় অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ পানি রাখতে বলছে। আম গাছের গোড়ায় সকাল-বিকেল পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনে গাছের শাখা-প্রশাখায় পানি স্প্রে করতে হবে। সবজি-ফসলি জমিতে বিকেলে মাটি ও ফসলের ধরন বুঝে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। ফল ও সবজির চারা তাপ থেকে রক্ষা করতে মালচিং ও সেচ দিতে হবে।
সদর দক্ষিণ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের ধান চাষি আনু মিয়াসহ আরও কৃষকরা বলেন, এত তাপ আগে দেখিনি। গরমে আমার বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষি অফিসার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু তাতে কি হবে। আল্লাহ যে গরম দিয়েছেন তা আল্লাহ বৃষ্টি দিয়ে কমিয়ে না দিলে ফসল নষ্ট হবেই। তবু কৃষি অফিসারের পরামর্শে যতটুকু রক্ষা করতে পারি চেষ্টা করছি। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।
কুমিল্লা বৈজ্ঞানিক প্রধান কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. জামাল উদ্দিন বলেন, আমের গুটি বাঁচাতে প্রয়োজনে গাছে পানি স্প্রে করতে হবে।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইয়ুব মাহমুদ বলেন, ধানের জমিতে পানি না থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। তাপপ্রবাহ থেকে ফসল রক্ষার্থে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।