কুমিল্লায় পুরুষদের চেয়ে ডায়বেটিক রোগে এগিয়ে নারীরা

# অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে ডায়বেটিক রোগী # প্রয়োজন জনসচেতনা # সন্তান নেয়ার আগে নারীদের ডায়বেটিকস পরীক্ষা করা জরুরী
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

দিন দিন কুমিল্লায় বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। এই সংখ্যার লক্ষ্যণীয় অংশে রয়েছে শিশু ও ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারী পুরুষ। আক্রান্ত হচ্ছেন গর্ভবতী নারীরা।তবে মোট সংখ্যার বিচারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নারীরা। কুমিল্লা ডায়বেটিক সমিতি ও ডায়বেটিকস রোগের চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
কুমিল্লা ডায়াবেটিক সমিতির তথ্যমতে, কুমিল্লা ডায়াবেটিস হাসপাতালে বর্তমানে এক লাখ ৭১ হাজার ৫২২জন রোগী রেজিস্ট্রেশন করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে দুই হাজার ৬৮জন গর্ভবতী নারী। প্রতিদিন নতুন সনাক্ত হয়ে রেজিস্ট্রেশন করছেন গড়ে ৪০জন রোগী। যা বছরে দাঁড়ায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি।
জানা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন সনাক্ত হয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন চার হাজার ৮৬৮জন রোগী। আর এবছরের জানুয়ারি থেকে আজকের দিন (১৩ নভেম্বর) পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৪ হাজার ৯৩৫জন রোগী। যা সংখ্যায় একমাস বাদ রেখেই ৬৭জন বেশি।
হাসপাতালের একটি সূত্র বলছে, এই রোগীর দ্বিগুণ রোগী সেবা নিচ্ছেন কিন্তু রেজিস্টার ভুক্ত হচ্ছেন না। এছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে প্রতিবছর ২০ হাজারের বেশি রোগী নতুন সনাক্ত হচ্ছেন। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখছেন বলে আর সরকারি হাসপাতালে আসছেন না। আবার অনেকে সনাক্ত হলে রাজধানীর দিকে ছুটেন। সনাক্ত রোগীর একটি বড় অংশ প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসক দেখিয়ে নিজেদের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. আতাউর রহমান জসিম বলেন, ধারণা করছি প্রতিবছর ২০হাজার নতুন রোগী সনাক্ত হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন কিন্তু প্রকাশ করছেন না। আমরা রোগী দেখি আমরা জানি আগের তুলনায় কত বেশি রোগী বেড়েছে।
তিনি আরও বলে, ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সনাক্ত হলে আর ছাড়ে না। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। গর্ভবতী মায়েদেরে প্রতি পরামর্শ আপনারা সন্তান ধারণের পরিকল্পনার পূর্বেই ডায়াবেটিস পরীক্ষ করুন। ডায়াবেটিস সনাক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনুন। তারপর সন্তান নিন। এতে সন্তানও ভালো থাকবে আর আপনিও ভালো থাকবেন। এর বিপরীত হলে সন্তান বিকলাঙ্গও বা মৃতও হতে পারে।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুমিল্লা জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতেও বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন বলেন, আমাদের জেলা সদর হাসপাতাল, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ সকল উপজেলায় ডায়াবেটিস সনাক্ত ও রোগের ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেক রোগীকে প্রতিবারে এক মাসের করে ঔষধ দেয়া হয়। এই ছাড়াও কেউ যদি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা নিতে চায় সেখানেও ঔষধ পাওয়া যায়।
কুমিল্লা ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মির্জা মো. কোরেশী বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে কুমিল্লার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক প্রচারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর নানা ধরণের কর্মসূচি পালন করা হয়।