কুমিল্লা মহানগর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। গত ১৫ মে ছাত্রদলের ওই দুটি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে দলের পদ বঞ্চিত একটি গ্রুপ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন আসছে। আর পদপ্রাপ্তরা করছে আনন্দ মিছিল। সবশেষ শনিবার রাতে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মহানগর এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এদিকে নবগঠিত ওই কমিটি বাতিলের দাবি অব্যাহত রেখেছে বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
ছাত্রদলের দলীয় সুত্র জানায়, গত ১৫ মে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের ৬সদস্য বিশিষ্ট এবং কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এতে দলের কারা নির্যাতিত এবং ত্যাগী কর্মীরা কাঙ্ক্ষিত পদ পায়নি বলে অভিযোগ করা হয়। তাছাড়া দলের ২৭টি ওয়ার্ড এবং কোন কলেজ শাখা থেকে সদস্য রাখা হয়নি বলে দাবি নেতাকর্মীদের। ওই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদলের পদপ্রাপ্ত এবং পদ বঞ্চিত দুটি গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘাত সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পদবঞ্চিত নেতা মোঃ মহসিন বলেন, ফ্যাসিবাদের আমলে যারা জেল জুলুম মামলা হামলার শিকার হয়েছে তারা নবগঠিত কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অনেক ত্যাগী নেতা থাকতে দলে যাদের কোনো কন্টিবিউশন নেই তাদেরকে কিভাবে কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হলো? এই কমিটি আমরা মানি না। বিষয়টি নিয়ে আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নবগঠিত মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদুজ্জামান রানা বলেন, শৃঙ্খলাভঙ্গ করে যারা বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা কেউ পদবঞ্চিত হয়নি। তারা সবাই পদ পেয়েছেন। তারা কাঙ্খিত পদ না পেয়ে বিদ্রোহ করছেন। ১২ জন ছাত্রনেতা সভাপতি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। এরমধ্যে সবাই যোগ্য। আমি মনে করি আমার ভাগ্য ভালো তাই আমি পদ পেয়েছি। তাছাড়া দলের শীর্ষ নেতারা অতীত কর্মকাণ্ড বিচার বিশ্লেষণ করে এই কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন। দুঃসময়ের ত্যাগী এবং পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দিয়েই মহানগর এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, নবগঠিত কমিটি নিয়ে পদপ্রাপ্ত এবং পদ বঞ্চিতরা এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। যেকোনো সময় দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, সবাই তো আর কাঙ্খিত পদ পায় না। একটি কমিটি গঠন করা হলে পাওয়া না পাওয়ার বেদনা থাকতে পারে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দলের শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করা ঠিক না। দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের প্রতি আনুগত্য রেখে কাজ চালিয়ে গেলে দল সেটা মূল্যায়ন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ছাত্রদলের সকল নেতৃবৃন্দকে আমি আহবান করব সকলে মিলেমিশে কাজ করুন দেশ ও জাতির কল্যাণের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে চলুন।