গত ৩ বছরে কুমিল্লা অঞ্চলেই বন্ধ হয়েছে ৭ জোড়া ট্রেন চাহিদা থাকলেও ইঞ্জিন ও বগি সংকটে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

রেলপথ পূর্বাঞ্চল
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে এখনও জনপ্রিয় রেলপথ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ হওয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেলের চাহিদা। কিন্তু এর বিপরীতে যাত্রী চাহিদা কি মেটাতে পারছে রেলওয়ে? বছরের পর বছর লোকসান গুনছে রেলওয়ে। কিন্তু যাত্রী চাহিদা থাকার পরও লোকসান কমাতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে পারছে না রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাটি। উল্টো শুধু কুমিল্লা, লাকসাম ও চাঁদপুর রুটেই বন্ধ হয়ে গেছে ৭ জোড়া ট্রেন। এতে এ রুটের যাত্রীরা বেছে নিচ্ছেন বিকল্প পথ। কুমিল্লা ও লাকসাম স্টেশনে চলতি অর্থবছরের ৬ মাসেই বিক্রি হয় ১০ কোটি টাকার টিকিট। ট্রেনের সংখ্যা কমার পেছনে রেল কর্তৃপক্ষ দায়ী করছেন ইঞ্চিন ও কোচ সংকটকে।

জানা যায়, রেলওয়ে পূবাঞ্চলের করিডোর খ্যাত কুমিল্লা অঞ্চলে গত এক দশকে কুমিল্লা থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও চাঁদপুরসহ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে উন্নয়ন হয়েছে রেল সড়কে, আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে স্টেশনগুলোতে। কুমিল্লা, ময়নামতি, লালমাই, আলীশ্বর, হাসানপুর ও গুনবতি স্টেশন হয়েছে আধুনিক। তবে কয়েকটিতে এখনো শুরু হয়নি যাত্রী উঠা-নামা কিংবা সিগন্যালিংয়ের ব্যবহার।

কুমিল্লা রেলওয়ে উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী-(পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলছেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও এ অঞ্চলে বাড়েনি যাত্রী সেবা। কুমিল্লা থেকে নোয়াখালী, চাঁদপুর রুটে যাত্রী পরিবহনে একসময় ১৩ জোড়া ট্রেন থাকলেও গত ৩ বছরে রুটগুলোতে বন্ধ হয়েছে ৭ জোড়া। বাকি ৬ জোড়াও ধুঁকছে লোকবল সংকটে। তাই এসব রুটের যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। অনেকেই বাধ্য হয়ে বেছে নেন সড়কপথ।

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু ও কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট জামাল আহমেদ জানান, শুধু যাত্রী পরিবহন নয়, কুমিল্লা অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ায় মালবাহি ট্রেনের চাহিদাও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য পরিবহনে রেলে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে কলকারখানায় বাড়বে উৎপদান, গতি পাবে এ অঞ্চলের অর্থনীতি।

কুমিল্লা স্টেশন মাস্টার মো. শাহাবুদ্দিন ও লাকসাম স্টেশন মাস্টার মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঢাক-চট্টগ্রাম ও অভ্যন্তরীন রুটের আন্তঃনগর ও লোকাল ৩৪ জোড়া ট্রেনে যাত্রী উঠে লাকসাম ও কুমিল্লা স্টেশন থেকে। এখান থেকে গত অর্থ বছরে টিকিট বিক্রি হয় ১৫ কোটি টাকার। আর চলতি অর্থ বছরের ছয় মাসে বিক্রি হয় ১০ কোটি টাকার টিকিট। রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে পারলে পূর্বাঞ্চল রেলের রাজস্ব বাড়বে আরো ককেকগুণ।

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রেল কর্মকর্তাদের দাবি, ইঞ্জিন ও বগি সংকটে ট্রেনগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন কোচ আমদানি হলে আবারো বন্ধ ট্রেন চালুর আশা তাদের।