গরু বাজার নিয়ে দু’উপজেলায় সংঘর্ষ, আহত ১০

নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি ।।
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও লালমাই উপজেলায় অবস্থিত যুক্তিখোলা বাজারে গরু বাজার বসানো নিয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা ও লালমাই উপজেলা গ্রুপের মধ্যে সোমবার বেলা ১২টার দিকে দফায়-দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ১০জন আহত হয়েছে। যুক্তি খোলা বাজারটি জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার নশরতপুর এবং লালমাই উপজেলার যুক্তিখোলা ও আজবপুর গ্রামে অবস্থিত। সংঘর্ষে আহতরা হলেন নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নশরতপুর গ্রামের বাসু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রাকিব (১৮), একই গ্রামের বাহার মিয়ার ছেলে মাসুম (২১), আব্দুল আজিজের ছেলে ফজলুুল হক (২৪), সাইফুল ইসলামের ছেলে আল আমিন (২৮), আরব আলীর ছেলে মোবারক (৩০), জিতু মিয়ার ছেলে লিটন (২৫), ও লালমাই উপজেলার বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের আজবপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে সেলিম (৪০), বাহার উদ্দিনের ছেলে রুবেল (২৩), যুক্তিখোলা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে মহিন (২৪) একই গ্রামের মোহাম্মদ জীবন (১৮)। আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও গুরুতর আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গরু বাজারটিতে উভয় গ্রুপের কারোই সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেই বলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। নাঙ্গলকোট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আশ্রাফুল হক ও থানা পুলিশ এবং লালমাই উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নাসরিন সুলতানা ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গরু বাজার দু’টি বন্ধ করে দেয় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার উল্লেখযোগ্য গরু বাজার গুলোর মধ্যে যুক্তিখোলা গরু বাজার অন্যতম। এ বাজারটিতে ১৯৮৬ সালে শিক্ষানুরাগী ও দানবীর মরহুম এ বি এম আহসান উল্লাহ মজুমদার তৎকালিন চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে চলন মহাবিদ্যালয় নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। কলেজটি পরিচালনায় অর্থের যোগান দিতে করার জন্য কয়েক বছর পর কলেজ গর্ভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজ মাঠে গরু বাজার বসানো হয়। প্রথম দিকে গরু বাজারটি কলেজ কতৃপক্ষ পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে গরু বাজারের আয় থেকে কলেজকে প্রতি বছর ২লাখ ২০হাজার টাকা দিয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক সদস্য আবু বকর ননু’র নেতৃত্বে স্থানীয়রা বাজারটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। চলতি বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঠে গরু ছাগলের হাট বসানো যাবে না মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর থেকে গরু বাজার নিয়ন্ত্রণকারী গ্রুপ ও লালমাই উপজেলার বেলঘর গ্রামের আজবপুর ও পাশ্ববর্তী এলাকার লোকজন একই বাজারে ২টি গরু বাজার বসানো শুরু করে। এ নিয়ে নাঙ্গলকোট ও লালমাই উপজেলার স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর জেরে সোমবার গরু বাজার বসা নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও পরে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের আঘাতে উভয় গ্রুপের ১০জন আহত হয়।

নাঙ্গলকোট উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আশ্রাফুল হক বলেন, বাজারটি নিয়ে যেহেতু দু’পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। উভয় পক্ষকে বাজার থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক যে সিদ্ধান্ত দিবে, সিদ্ধান্তের আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি, আমি খবর নিয়ে দেখছি।