প্রার্থীদের মাদক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আরোপ, মামলা ও বাহাস, উৎকণ্ঠিত ভোটার

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

দে লো য়া র  জা হি দ :
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৫ই  জুন. বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।  তা ফুটে উঠে এ বিষয়ে দেশ বিদেশে প্রকাশিত নানা আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ।—” আনুষ্ঠানিক না হলেও বাংলাদেশে এরই মধ্যে নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে মন্তব্য করে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, নির্বাচন যে শুরু হয়ে গেছে সেটি আমরা এখানকার পত্রিকায় চোখ বুলালেই দেখতে পাই। তাই এখন থেকেই আমরা অবাধ, সুষ্ঠু এবং আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন নিশ্চিত করতে পুরো প্রক্রিয়ার ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। আগামী সংসদ নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বাংলাদেশের জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের বন্ধু-উন্নয়ন সহযোগীরা এখানে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দেখতে চায় জানিয়ে বাইডেন প্রশাসনের ওই প্রতিনিধি বলেন, বাংলাদেশের সরকার, জনগণ, মিডিয়া, সুশীল সমাজ, নির্বাচন কমিশন মিলেই ঠিক করবে এ দেশে নির্বাচন কীভাবে হবে। আমি সমপ্রতি বাংলাদেশে অবাধ ও স্বাধীন নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছি।—বৈশ্বিক মানবাধিকার সমুন্নত রাখা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসির মূল বিষয় উল্লেখ করে পিটার হাস বলেন, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এসব ক্ষেত্রে কারও সঙ্গে কোনো আপস নেই অর্থাৎ এখানে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে সাফ জানান তিনি।” মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিকাব) ফ্লাগশিপ প্রোগ্রাম ডিকাব টক-এ কথা বলছিলেন মার্কিন ওই দূত।(সূত্র ১লা জুন, মানবজমিন)

দেশে নির্বাচন পূর্ব এ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যে পর্যালোচনা একটি বিশেষ্য এবং একটি ক্রিয়া উভয় হিসাবে এর  অন্যান্য অনেক ইন্দ্রিয় আছে। পর্যালোচনা হল কোনো কিছুর সমালোচনা—কোনো কিছুর ভালো এবং খারাপ দিকগুলোর উপর  নজর দেওয়া। কেবল মাত্র গণমাধ্যম নয়
বরং বাংলাদেশের অত্যাসন্ন নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর  দৃষ্টি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ই.ইউ সহ উন্নত দেশগুলোর।  চলমান ইস্যু যেমন র‌্যাবের ওপর বিদ্যমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অর্থনৈতিক জোট গঠন নিয়ে ও
টানপোরণ  রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন ও প্রতিশ্রুত একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য আর সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধতার কথাও নিশ্চিত করছে নানা ভাবে।  কুসিক নির্বাচন নিঃসন্দেহে চলমান সময়ে একটি উত্তেজনাপূর্ণ ও আস্থা অর্জনের নির্বাচন। এখনো সংঘাত সংঘর্ষের মতো  অনাকাঙ্খিত ঘটনা যদিও ঘটেনি তারপর ও এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিডিয়া জগতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে কিছু বিষয় যা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত। গত ১৯ মে রাতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল টেবিল টকে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এর একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে  তার দাবি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক (রিফাত) প্রথমে ১৩ কোটি, এরপর ২০ কোটি, এরপর ৬০ কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনেছেন। তাঁর এ কথায় সমর্থন জানান মনিরুল হক চৌধুরী। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মনিরুল হক চৌধুরী, কলিমুল্লাহ সহ সে অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের নামে মামলা করা হয়েছে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী আশীর্বাদ রয়েছে এবং সংগত কারণে গত দুটি মেয়র নির্বাচনে (বিএনপির) প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কুর জয়ে তার সমর্থন ও প্রভাব ছিলো।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি ওয়ার্ডের ভোটারদের ওপর তার ‘প্রভাব’ রয়েছে বলেও মনে করা হয়. ভোরের কাগজের চার সাংবাদিক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মামলা রুজু করার খবর দিয়েছেন কুমিল্লা থেকে ইয়াসমিন রীমা। ১৮ মে নিউ এইজ এর এক প্রতিবেদনে জানা যায় মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ প্রচারের অভিযোগে আরফানুলের পক্ষে আইনজীবী মাসুদুর রহমান সিকদার কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এ মামলাটি করেন। এ মামলার আসামিরা হলেন- ভোরের কাগজের প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরী, ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য শ্যামল দত্ত, বার্তা সম্পাদক ইকতিয়ার উদ্দিন, সিনিয়র রিপোর্টার মুহাম্মদ রুহুল আমিন ও কুমিল্লা প্রতিনিধি এম ফিরোজ মিয়া। জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক আবদুল হান্নান আসামিদের সমন পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পত্রিকাটি ১৫ মে প্রথম পাতায় ‘কুমিল্লার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রিফাত এখন নৌকার মাঝি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদ আইটেমটির সাথে আরফানুল এর  একটি ছবি ছিল, যাকে আওয়ামী লীগ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসাবে
মনোনীত করেছে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনি প্রচারণায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ৪ঠা জুন এক প্রচারণায় বলেন, তিনি বিজয়ী হলে সর্বপ্রথম কুমিল্লার জলাবদ্ধতা এবং যানজট নিরসন করবেন এবং এক বছরের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান করযেন। মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রিফাত বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ তার বিরুদ্ধে নেই, কোনো মামলা কুমিল্লার আদালতে নেই, জেলা পুলিশের কাছেও নেই কোনো অভিযোগ । বরং তার (সাক্কু) চতুর্দিকে মাদক ব্যবসায়ীরা ঘিরে থাকে। সে মাদক ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যারা এসব কথা বলছে, তারাই বিভিন্ন মামলার আসামি। খুনের মামলা থেকে শুরু করে অনেক মামলার আসামি। গত কিছুদিন আগেও দুর্নীতি মামলার জামিন নিয়ে এসেছে।

সদ্য সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেছেন, গত দুই মেয়াদে আমি যেসব কাজ শেষ করতে পারিনি এবার নির্বাচিত হলে- সে কাজগুলো সফলভাবে শেষ করবো। শহর থেকে দুই বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নিলে যানজট কমে যাবে। কিন্তু পরিকল্পনা না করে কাজ করা হয় তাহলে যানজট জলাবদ্ধতা এসব নিরসন করা যাবে না। মাদক ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে সাক্কু বলেন, জনগণ দেখবে আমার সাথে কোন মাদক ব্যবসায়ী আছে কি না। প্রমাণ ছাড়া কথা বলা উচিত না। আমার একটাই কথা মাদক ব্যবসায়ী যদি আমার সাথে ঘুরে- তাহলে পুলিশকে কেন বলে না। আমার বিরুদ্ধে তো প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে অভিযোগ আসেনি। উনার বিরুদ্ধে আছে। রিফাত মাদকের তালিকায় এক নম্বর কেন?

স্বতন্ত্র মেয়র প্রারর্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেছেন, মনিরুল হক সাক্কু সব সময় বিএনপির সুযোগসন্ধানী।—তিনি বলেন, কারা মাদক কারবারি তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের। ইতিমধ্যে সরকার এই তালিকা প্রকাশ করেছেন। মাদককারবারির টাকা দিয়ে কেউ নির্বাচন করবে তা আমি বিশ্বাস করি না। গত ১১ বছরে যে লুট হয়েছে তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কেউ কেউ মানুষকে টাকার প্রলোভন দেখাচ্ছে। আমার মনে হয় কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়। এবার কুমিল্লার মানুষ টাকার কাছে ভোট বিক্রি করবে না।  (সূত্র ৫ জুন, কুমিল্লার কাগজ )

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।—তাজুল ইসলাম বলেন, কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে সকল ধরণের সহায়তা দিতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও এ বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে সকল দলের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ করলে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করে এবং এটি থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। বিশ্বের অনেক দেশের নির্বাচনই উত্তেজনাপূর্ণ হয়। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা কারোরই কাম্য নয়।

কুসিক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী আলাদা সুবিধা পাচ্ছে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থীর আলাদা সুবিধা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।(বাসস)

ভোরের কাগজ এর প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরী ও সম্পাদক শ্যামল দত্ত সহ পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কুমিল্লায় মানহানির মামলা দায়েরের জের  ধরে দেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত  করেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় মিটিং, মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বক্তারা অবিলম্বে এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে, ব্যর্থতায় ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ।

স্মরণ করা যেতে পারে ২০২১ এর  ২৩ নভেম্বর ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তার সহযোগী কে গত    ২২ নভেম্বর পাথুরিয়াপাড়া এলাকায় তার নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করেছে মুখোশধারী বন্দুকধারীরা। নিহতদের মধ্যে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ আহমেদ সোহেল (৪৮) সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। অন্য একজন, হরিপদ দাস, ৪৫, ওয়ার্ড ইউনিট আওয়ামী লীগের সদস্য, কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ সহযোগীর একজন। আহতরা হলেন আউয়াল হোসেন রিজু (২৩), রাসেল (২৯), মাজেদুল হক বাদল (৩৯), জুয়েল (৪০) ও সোহেল চৌধুরী (৪৩)। এ নৃশংস ঘটনার পর নানা আলোচনা, সমালোচনা দানা বাধে মানুষের মনে আর সেই ভীতিকর স্মৃতি কুমিল্লাবাসীকে এখনো তাড়া করছে।

অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রচার প্রচারণা এখন তুঙ্গে। আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত , বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত  স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারের প্রচারণায় এখন মুখরিত কুমিল্লা। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যেখানে দলীয় সমর্থন পুষ্ট সেখানে  মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও   নিজাম উদ্দিন কায়সার তাদের দলীয় অর্থাৎ বিএনপির রুষ্টতার শিকার তারপরও নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে  চলছে ভোর থেকে গভীর রাত অবদি প্রচারণা এবং দফায় দফায় সভা ও বৈঠক। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রতিকের প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুলও প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছেন ।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষ্যে এ পর্যন্ত যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা প্রশংসিত হয়েছে। নির্বাচন আচরণ বিধি ভঙ্গের বিষয়ে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ ও লক্ষণীয়। বাংলাদেশে বিশ্বমানের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা পূরণ অসম্ভব নয় যেমন  অসম্ভব হয়নি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ। বাংলাদেশ এ সত্যটি সম্পর্কে সচেতন যে প্রতিটি রাষ্ট্রের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে, তার জনগণের ইচ্ছা অনুসারে, জাতিসংঘের সনদের সাথে কঠোরভাবে সামঞ্জস্য রেখে অন্য রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে নিজস্ব রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা বেছে নেওয়া এবং বিকাশ করার। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তির তাৎপর্য পুনঃ নিশ্চিত করে যা প্রতিষ্ঠিত করে যে শাসনের কর্তৃত্ব জনগণের ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে হবে যেমনটি পর্যায়ক্রমিক এবং প্রকৃত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়.
কুমিল্লা  বাংলাদেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পল্লী উন্নয়নের পাদপীঠ।  কুমিল্লা থেকে বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারি দেশ হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ এসেছে এ নির্বাচন কমিশনের।  অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠ  ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এ নির্বাচন করার মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করার  প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে হবে. সম্পূর্ণ পেশাদারিত্ব ও সততা বজায় রেখে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এর সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়বে আগামী নির্বাচনের উপর।

[লেখক : সিনিয়র রিসার্চ ফ্যাকাল্টি মেম্বার, প্রাবন্ধিক ও রেড ডিয়ার (আলবার্টা, কানাডা ) নিবাসী]