টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে বিপদসীমার ১০৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদী। এতে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার কোথাও কোথাও নদীর বেড়িবাঁধ চুঁইয়ে বের হচ্ছে পানি। কোথাও কোথাও রয়েছে ফাঁটলের শঙ্কা। নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যার ফলে বেড়ি বাঁধের আশপাশের মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। তলিয়ে যাচ্ছে বসতবাড়িসহ ফসলি জমি। সরেজমিনে গোমতী নদীর পাড় ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রশাসন, পাউবো, জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবী, স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। তলিয়ে যাওয়া বাড়ি ঘরের মানুষ, গৃহপালিত গবাদিপশু ও আসবাবপত্র নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো সময় নদীর পাড় ধসে বড় ধরনের প্লাবনের শঙ্কায় সময় পার করছেন স্থানীয়রা। অতিবৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে গোমতী পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা রাত জেগে নদীর বেড়িবাঁধ পাহারা দিয়েছেন। বেড়িবাঁধের উপচে পড়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে দেওয়া হচ্ছে বালি ভরা বস্তা। বাঁধ ধসে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উপজেলার কয়েক লাখ পরিবার। নদীর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মনোহরপুর, চন্ডীপুর, অলুয়া, রামনগর, মালাপাড়া, আসাদনগর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বেড়িবাঁধের ভেতরের বাসিন্দারা বাড়িঘরের জিনিসপত্রও বার করতে পারেনি। কোনোরকমে জীবন বাঁচিয়ে ফিরেছেন চরাঞ্চলের মানুষ। ওইসব বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও নদীর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এখনো নদীর পানি বাড়ছে, যদি বেড়িবাঁধ ভেঙে যায় তবে লক্ষাধিক মানুষ সর্বস্ব হারানোর শঙ্কা রয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে কয়েক লাখ পরিবার। বিগত দুই দশকেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি স্থানীয় বাসিন্দাদের। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতী নদীর পানি বিপদসীমার ১১১( সন্ধা পর্যন্ত) সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও কুমিল্লা পাউবো একযোগে কাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে নেমে আসা ঢল এবং অতিবৃষ্টির দরুণ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মালাপাড়া এবং শশিদল ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, গোমতীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বেড়ি বাঁধও হুমকির মুখে।