ব্রাহ্মণপাড়ায় সম্পত্তির জেরে তিনদিন যাবৎ বাড়ির আঙ্গিনায় পড়ে আছে বাবার লাশ

ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধি ।।
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

বাবার মৃত্যুর পর সন্তানরা অঝোরে কাঁদবে। পরম যত্নে বাবাকে দাফন করবে। তার জন্য দোয়া করবে। একজন বাবা তার সন্তানদের কাছে এই তো আশা করেন। কিন্তু কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের কালেমকান্দি গ্রামে হতভাগা বাবা মৃত্যুর পর সন্তানদের শোক প্রকাশ তো দূরে থাক সময় মতো দাফন ও পাননি।
সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে বাবা সাবেক সেনা সদস্য আবদুল লতিফ (৮৫) এর লাশ বাড়ির পাশে রাস্তায়
ফ্রিজিং এম্বুলেন্সে ফেলে রেখে প্রায় ৩দিন ধরে বিরোধ চলছে তার সন্তানদের মাঝে।।
প্রায় ৩ দিন তার লাশ পড়ে ছিল বাড়ির পাশে রাস্তায় একটি ফ্রিজিং গাড়িতে। শনিবার রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার লাশ দাফন হয়নি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আনুমানিক সাড়ে ১২ টায় পরপারে পাড়ি জমান সাবেক সেনা সদস্য আবদুল লতিফ।
পরে তার লাশ নিয়ে ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়।
তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে সন্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় শনিবার রাতেও লাশ দাফনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। পরে সেই অ্যাম্বুলেন্সেই রাখা হয় লাশ। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এক পর্যায়ে ছুটে আসেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তারাও সঠিক সমাধান দিতে পারেনি।
খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মৃত আঃ লতিফ
তারা ৩ ছেলে ও ২ মেয়েসহ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। সম্পত্তি ভাগাভাগির বিষয়টি তার বড় ছেলে পারেনি। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই পারিবারিক বিরোধ চলছিল।
এবিষয়ে ছোট ছেলে মোঃ মনির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে বলেন, বাবা মারা গেছেন বৃহস্পতিবার রাতে সাড়ে ১২ টায়। আমার বড় ভাই মোঃ আজাদ মিয়া গ্রিসে থাকেন। সে আসলে রবিবারে দাফন করা হবে। আমাদের পারিবারিক একটু ঝামেলা আছে। তবে সম্পত্তির কারণে লাশ রাখা হয় নি। আগামী রবিবারে বিষয়টির সমাধান করে লাশ দাফন করা হবে বলে জানায় তিনি।
স্থানীয়রা জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আবদুল লতিফের সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আর ছোট ছেলের সাথে দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলছিল।
ছোট ছেলে সাব-রেজিস্টার অফিসে কাজ করেন। সে তার বাবার সঙ্গে থাকতেন। কিছু সম্পত্তি অন্যান্য ভাইদের না জানিয়ে সে তার নামে দলিল করে ফেলেছেন।
এ নিয়ে অনেক বার গ্রাম্য সালিশিরা বৈঠক বসে সমাধান করার চেষ্টা করেন। তবে তারা ব্যর্থ হয়ে চলে আসেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আবদুল লতিফ মারা যাওয়ার দিন সকাল থেকেই বাড়ি ও জমির ভাগভাটোয়ারা নিয়ে ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে গ্রিসে থাকা বড় ছেলে আজাদ দেশে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
সাংবাদিকরা মৃত্যু আবদুল লতিফের স্ত্রী সঙ্গে কথা বলতে গেলে ছোট ছেলে মনির সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করেন। কোন ভাবেই কথা বলার সুযোগ হয় নি। মৃত আঃ লতিফ এর ভাগিনা এমদাদ হোসেন বলেন মামা মারা গেছে বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে৷ মামার বড় ছেলে গ্রীস প্রবাসী আজাদ ভাই এবং বড় মেয়ে আসবে রবিবার রাতে৷ তারা আসলে মামাকে দাফন করা হবে৷ জায়গা নিয়ে মামাত ভাইদের মধ্যে ঝামেলা থাকতে পারে৷ মামাকে দাফন করা হবে তার বড় ছেলে এবং বড় মেয়ে দেখার পর৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকা বাসি জানায় বড় ছেলে এবং বড় মেয়ে বিষয় নয় মূল বিষয় হচ্ছে ছেলেদের মধ্যে সম্পদ ভাগবাটোয়ারা৷ যার কারনে মৃত্যুর তিন দিন হলেও দাফন করা হয়নি সাবেক সেনাবাহিনীর সদস্য লতিফকে৷
শশীদল ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ সুমন মিয়া জানায় বিষয়টি আমার জানা নাই৷ খবর নিয়ে দেখি কি করা যায়৷