হোমনায় মোরগে মরিচের চারা খাওয়ার ঘটনায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ নিহত

হোমনা প্রতিনিধি।।
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

হোমনায় মোরগে মরিচের চারা খেয়ে ফেলার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওসমান গনি (৭০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে হোমনা থানা পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে সাতটায় উপজেলার মাধবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মৃত মোজাজ্জল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় একই বাড়ির আবুল হোসেনের ছেলে মহিউদ্দিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওসামান গণি ও মহিউদ্দিনের বাড়ি পাশাপাশি। তারা একে অপরের প্রতিবেশী ও সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা হন। তাদের দুই বাড়ির মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় মহিউদ্দিন মরিচের চারা রোপন করেন। সকালে ওসমান গণির গৃহপালিত মোরগ মহিউদ্দিনের মরিচ গাছ খেয়ে ফেলে। এ ঘটনায় উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে ওসমান গণি তার ঘরের সিঁড়িতে গিয়ে বসে পড়েন। এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন তাকে (ওসমান গণি) ধাক্কা দিয়ে খড়ের গাঁদায় ফেলে দেন। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে হার্টের সমস্যা থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার করেন। পথে সাড়া শব্দ না পেয়ে পুনরায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছেলে মো. জাকির, মো. নূরুজ্জামান ও মো. রমজান বলেন- ‘আমাদের পালিত মোরগ নাকি মহিউদ্দিনের মরিচ গাছ খেয়ে ফেলেছে। এ জন্য সে বাবাকে গালমন্দ ও কিল ঘুষি মেরে ফেলে দিয়ে হত্যা করে। আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. রাহিদুজ্জামান সূর্য্য বলেন, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওসমান গণিকে অর্ধ চেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার হার্টের সমস্যা ধরে পড়ে। পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গত দশ বছর যাবত তিনি হার্টের ওষুধ সেবন করতেন। আগেও একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তার। আজও অতিরিক্ত উত্তেজনার ফলে পুনরায় তার হার্ট অ্যাটাক হয়। সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পথিমধ্যে তিনি হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ব্যাপারে হোমনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, মহিউদ্দিনের মরিচ গাছ খেয়ে ফেলেছে ওসমান গণির মোরগ। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওসমান গণিকে মহিউদ্দিন ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার করলে পথিমধ্যে তিনি মারা যান। শরীরের কোথায়ও কোনো জখমের চিহ্ন নেই। ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন হার্টের অসুখে ভুগে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতেন এবং পূর্বে তার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কথাও বলেন তিনি। এ ঘটনায় মহিউদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।