পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে এলাকার কিছু লোকজন মাদকসহ আবদুর রহিমকে আটক করে। এ সময় তিনি তাঁদের ছুরিকাহতের চেষ্টা চালায়। এতে লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে গনপিটুনিতে দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এলাকাবাসী আরো জানান, আবদুর রহিম একজন চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী। অনেক বছর ধরে তিনি এলাকায় মাদকের ব্যবসা করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে লাকসাম থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৬ আগষ্ট পাশবর্তী সাতবাড়িয়া গ্রামের মমিন আলীর ছেলে রুবেল নামে আরেক মাদক ব্যবসায়ী আবদুর রহিমের হাতেই খুন হয়েছেন।
মাদক ব্যবসার ভাগবাটোরা নিয়ে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে আবদুর রহিমের ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিছুদিন আগে তিনি জরিমানার একলাখ টাকা পরিশোধও করেছেন। তবুও তাঁকে মাদক ব্যবসা থেকে এলাকার লোকজন ফেরাতে পারেনি।
নিহত আবদুর রহিমের স্ত্রীর দাবি, জায়গা সম্পত্তির বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তার অভিযোগ, ঘটনার দিন রাত অনুমান দেড়টার দিকে আবদুর রহিম লাকসাম বাজার থেকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় এসে বাড়ির সামনে নামেন। ওই সময় আগে থেকেই সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা কতিপয় দুর্বৃত্ব হঠাৎ তাঁকে ধাওয়া করে।
এ সময় তিনি কোনো কিছু বুঝে ওঠতে না পেরে প্রাণ ভয়ে দৌড়ে তাঁর একটি মুরগির খামারে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ধরে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটায়। একপর্যায়ে তিনি প্রাণ বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু প্রাণে আর বাঁচতে পারলো না। সেখান থেকে তুলে এনে তাঁকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্বরা।
লাকসাম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) টমাস বড়ুয়া বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় নিতের স্ত্রী পারভীন আক্তার আটজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।