কুসিক মেয়র পদে উপ নির্বাচন ভোটাররা কি পারবে শঙ্কা মুক্ত হয়ে নিশ্চিন্তে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে ?

সময়ের কড়চা
শাহাজাদা এমরান ।।
প্রকাশ: ২ মাস আগে

#  জেলা প্রশাসক,রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপার সমীপে

আমরা জানি, আগামী ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যেই মনোনয়ন যাছাই বাছাই কার্যক্রম শেষ হয়েছে। ৪ জন হেভিওয়েট প্রার্থী এবার মাঠে নেমেছে। তারা হলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি ও মহানগর আওয়ামীলীগের উপদেষ্ঠা কমিটির সদস্য নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম,কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. তাহসিন বাহার সূচনা, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে প্রার্থীরা পুরোদমে প্রচারণায় নেমে যাবে। ইতিমধ্যেই যার যার অবস্থান থেকে প্রচারণা শুরু করেছেন। রাস্তাঘাটে আমাদেরকে দেখলেই জনগণ জিজ্ঞেস করে, সাংবাদিক সাহেব নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে কিনা। তাদেরকে বলি, আপনারা ভোটকেন্দ্রে গেলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে ভোটারদের মধ্যে যে শঙ্কা কাজ করে, তা দিন দিন আরো বাড়ছে। জনগণ ভোটকেন্দ্রে যেতে চায়। আর জনগণকে ভোট কেন্দ্রে নেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে।
জনগণ এখনো শেষ ভরসা হিসেবে সাংবাদিকদের কাছে জানতে চায় খবরাখবর । আমরা পরিষ্কারভাবে কিছুই বলতে পারছি না। কারণ, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতাগুলো সুখকর নয়। কিছুদিন আগেও সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় নির্বাচনে কুমিল্লার একটি আসনের একটি কেন্দ্রে ৪ ঘণ্টায় পড়েছিলো শত ভোট, সেখানে পরবর্তী ১ ঘণ্টায় দেখেছি ২ হাজার ভোট পড়েতে। এই উদাহরণ শুধু যে কুমিল্লায় হয়েছে তা নয়। এটা সারা দেশেরই একই চিত্র ছিল।
আমরা জানি গণতন্ত্র না থাকলে, গণমাধ্যমও বিকশিত হতে পারে না। গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রে গণমাধ্যম ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নির্ধিরাম সর্দারের মতো। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা দেখতে চাই, নির্বাচন কমিশনের সত্যিই মেরুদণ্ড আছে কিনা। কুমিল্লার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলতে চাই, আপনি তো এই এলাকার মানুষ নয়। আপনার অধীনে একটি সুন্দর নির্বাচন করে দিন। আমি জেলা প্রশাসককেও একই কথা বলতে চাই। আপনারা তো আজীবন কুমিল্লায় থাকবেন না। আপনাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যান। যারা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছে, তাদের সেই আশঙ্কাকে দূর করে দিন। জনগণ ভোট দিতে চায়। তারা তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে চায়।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উপ নির্বাচন দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে না ও সরকারের খুব বেশী লাভ বা ক্ষতি হবে না। এখানে আওয়ামীলীগের ২ জন ও বিএনপিরও ২ জন রয়েছে। আমি গতকাল বেশ কয়েকজন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। সবার মধ্যেই কিন্তু সন্দেহ বিরাজ করছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবে কিনা। কেন্দ্রের দুই পাশে কোন বিশেষ দলের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে থেকে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে কি না ?
আমি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন উপ নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত সকল প্রশাসনের লোকজনকে বলবো, আপনারা ভয়-ডর কে দূরে ঠেলে দিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিয়ে কুমিল্লার মানুষের মনে আজীবনের জন্য থেকে যান। এবার যেহেতু বিএনপির দুইজন বহিষ্কৃত প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। তাদের দলের নেতাকর্মীরাও কিন্তু ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে গিয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে, তারা এবার আশাহত হয়ে যাবে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা সেটা প্রশ্ন থেকে যাবে।
তাই জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলবো, আপনারা যে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে আছেন সেটার প্রমাণ আগামী ৯ মার্চ দিবেন। তাহলে কুমিল্লার আপামর জনগণ আপনাদেরকে মনে রাখবে। আমরা আপনাদের মেরুদণ্ড কত টুকু সোজা আছে সেটা এবার দেখতে চাই।