নাঙ্গলকোটে পরিবারের সদস্যকে ওয়ারিশ সনদ থেকে বাদ দিয়ে জায়গা দখলের চেষ্টা!

নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি ।।
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব খাড়ঘর গ্রামে পরিবারের ১ সদস্যকে ওয়ারিশ সনদ থেকে বাদ দেয়া ও পতিপক্ষের সীমানা বেড়া ভেঙ্গে, গাছ কেটে জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে ফাতেমা বেগম তার মেয়েরা ও জামাতাদের বিরুদ্ধে। সরে জমিনে বুধবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ফাতেমা তার লোকজন মিলে প্রতিপক্ষের সীমানার বেড়া ভেঙ্গে ও অন্তত ১০-১৫টি গাছ কেটে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব খাড়ঘর গ্রামের মৃত মাস্টার অজি উল্লাহ মারা যাওয়ার সময় পাঁচ কন্যা, এক পুত্র ও দুই স্ত্রী রেখে যান। মাস্টার অজি উল্লাহর রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে তার বড় স্ত্রী ও বড় কন্যা ৫৪ শতক সম্পদের মালিক হয়। তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাওলানা জাফর আহমেদ মজুমদার মাস্টার অজি উল্লার ২স্ত্রী, ১পুত্র ও ৫ কন্যার নাম উল্ল্যেখ করে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে মেয়ে সহিদা বেগম পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে ২ চাচার নিকট ৩৮শতক জমি বিক্রি করে। বিষয়টি জানার পর তার সৎ মা ফাতেমা বেগম বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার রফিকুল ইসলাম মজুমদারের নিকট থেকে তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী রওশনারা বেগমের নাম গোপন করে ৭ জনের নামে ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করেন। এরপর থেকে নতুন করে ফারায়েজ সৃষ্টি করে বড় কন্যা সহিদা বেগম প্রাপ্য অংশ থেকে বেশি সম্পদ বিক্রি করেছে দাবি করে ফাতেমা সহিদা বেগমের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে মামলা করে। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত সহিদার পক্ষে রায় প্রদান করে। এর জেরে প্রতিহিংসা বশত ফাতেমা তার মেয়ে ও জামাতারা মিলে সহিদা বেগমের বিক্রিত ৩৮ শতক সম্পত্তির ক্রয় সূত্রে বর্তমান মালিক জয়নাল আবেদিন ও আব্দুল মমিনের জায়গার বেড়া ভেঙ্গে ও গাছ কেটে দখল করে নেয়ার চেষ্টা করে। এবং তাদেরকে নানাভাবে পুলিশি হয়রানির অভিযোগও করেন তারা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুল মমিন,ও জয়নাল আবেদিনের পুত্র হোসাইন বলেন, আমরা সহিদার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে ২০১২ সালে ৩৪ শতক সম্পত্তি ক্রয় করি। পরবর্তীতে সহিদার সৎ মা ফাতেমা বেগম সহিদা এবং জমিন ক্রেতাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলার রায় সহিদার পক্ষে আসে। এরপর থেকে ফাতেমা গংরা আমাদেরকে পুলিশি হয়রানি সহ জায়গা দখল করে নেয়ার পায়তারা করে আসছে।

সহিদা বেগম বলেন, আমার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে আমার মায়ের অংশ সহ আমি ৫৮ শতক সম্পত্তির মালিক হই। এ সম্পত্তি থেকে দুই চাচার নিকট ৩৪ শতক সম্পদ বিক্রি করি। বিষয়টি জানতে পেরে আমার সৎ মা আমার মায়ের নাম বাদ দিয়ে নতুন করে ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করে আমি বেশি সম্পদ বিক্রি করেছি দাবি করে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আমার পক্ষে রায় দেয়। এরপর থেকে আমার সৎ মা নানা ভাবে আমাকে ও আমার কাছ থেকে জমি ক্রয় কারীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে।

অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম বলেন, এ সম্পত্তিটি ২০০৮ সালে আমার ছেলে ইব্রাহিম বাহাদুরের নামে কবলা করে দিয়েছি। একই সম্পত্তি সহিদা তার চাচাদের নিকট বিক্রি করে, যার কারণে আমরা আমাদের সম্পত্তিতে দেয়া বেড়া সরিয়ে দেই।

রায়কোট উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি যাচাই-বাছাই করে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করি। আমার জানামতে ভুল হওয়ার কথা নয়।

নাঙ্গলকোট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।