অপারেশনের ৩ মাস ১৬ দিন পর রোগীর ব্রেস্ট থেকে বের হলো গজ কাপড়

কুমিল্লা নাভানা হসপিটালের চিকিৎসা ও ডা. ফয়সালের অপারেশন নমুনা !
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

ব্রেস্টের ভেতরে রক্ত পরিস্কার করা (মফস) কাপড় রেখেই এক রোগীর ব্রেস্ট সেলাই করেছে ডা. আবুবকর ছিদ্দিক ফয়সল নামে এক চিকিৎসক।ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা নগরীর নাভানা নামের একট হসপিটালে। ব্রেস্ট অপারেশনের ৩ মাস ১২ দিনের মাথায় রুগী গোসল করতে গেলে ব্রেস্টে সুতার মতো কিছু দেখতে পেয়ে গ্রামের একটি ক্লিনিকে গেলে ওখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুতো টান দিলে ৬/৭ ইঞ্চি লেন্টের গজ কাপড় বেরিয়ে আসে।এ নিয়ে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের প্রতি দাবি তুলেছেন।

জানা গেছে,ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ছত্রন খোলা এলাকার মৃত হামিদ মিয়ার মেয়ে আকলিমা (২৮) ব্রেস্টের ব্যথার কারনে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিল।পরে এলাকা থেকে চিকিৎসার জন্য ছুটে আসে কুমিল্লা নগরীর নাভানা হসপিটালে।হসপিটালে কর্তব্যরত ডাক্তার আবুবকর ছিদ্দিক ফয়সল রুগী দেখে অপারেশনের কথা বলেন। পরে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখ নাভানা হাসপিটালে ব্রেস্ট অপারেশন করেন কর্তব্যরত ডাক্তার আবুবকর ছিদ্দিক ফয়সল।অপারেশনের সময় রোগীর ব্রেস্টের মধ্যে মফস রেখে সেলাই করা হয়।

ভুক্তভোগী রুগী আকলিমা জানান, অপারেশনের পর থেকে আমি আর তেমন চলাফেরা করতে না পেরে আমার বোনের বাড়িতে থাকি।আমি গরীব মানুষ। আমি এখন কুমিল্লা এসে চিকিৎসা করব এমন টাকাও আমার কাছে নেই।গত জানুয়ারিতে আমার ব্রেস্টে সমস্যা দেখা দেওয়ায় কুমিল্লায় অপারেশন করি।কয়েকদিন পর ব্যথা বাড়তে শুরু করে।আমি গোসলে গেলে আমি আমার ব্রেস্টে দেখি একটি সুতার মতো।পরে গ্রামের ডাক্তার দেখাইলে ডাক্তার আমার ব্রেস্ট থেকে অনেক বড় সাদা একটি কাপড় বের করে।ডাক্তার বলছে ভেতরে অনেক পুজ আছে।আমার টাকা নেই কিভাবে চিকিৎসা করব।

রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে ওই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকরা বলেন,রিপোর্ট অনুযায়ী একটি আলট্রাসনো করেছে ওই হসপিটাল।অথচ ওই রিপোর্টে কাপড়ের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।তার মানে তাদের আল্ট্রাসনো মেসিনেও সমস্যা আছে।আর ডাক্তার কীভাবে এই সেলাই গজ কাপড় ভেতরে দিয়ে দিলো তা আমাদের বুঝে আসেনা।রোগীর আর্থিক ও শরীরের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচ্য হয়ে দাঁড়িয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. আবুবকর ছিদ্দিক ফয়সল বলেন,আমি এমন কাজ করিনি।রোগীকে এনেছে আমাদের পরিচিত এক নার্স।রোগী অনেক আগে এসে অপারেশন করেছে।এরপর কিছু সমস্যা ছিলো তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। রোগীতো সুস্থই আছে।

কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।রোগী অভিযোগ করবে শুনেছি,অভিযোগ পাওয়ার পর দায়ী চিকিৎসক ও হসপিটলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।